
রোববার (২৬ নভেম্বর) এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর কিছু শিক্ষার্থী জানতে পারে তাদের রোল নাম্বার পরিবর্তণ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রে থাকা রোল নাম্বার দিয়ে অনলাইনে ফলাফল জানতে সার্চ করলে, ওই রোল নাম্বারের বিপরীতে আসছে অন্য প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর নাম।
বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবগন সংশ্লিষ্ট কলেজের দ্বারস্থ্য হলে, কলেজ কতৃর্পক্ষ শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন প্রবেশ পত্র ধরিয়ে দিয়ে নতুন ওই প্রবেশপত্রে উল্লেখিত রোল নাম্বার দিয়ে ফলাফল জানার জন্য বলেন। এ নিয়ে কলেজ কতৃর্পক্ষ ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
শিক্ষাথী-অভিভাবকদের অভিযোগ স্ব স্ব কলেজ কতৃর্পক্ষের বিরুদ্ধে। তাদের দাবী, সংশ্লিষ্ট কলেজ কতৃর্পক্ষ শতভাগ সাফল্যের গ্যারান্টি দিয়ে তারা কিছু শিক্ষার্থীকে তাদের কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করিয়েছেন। ওইসব শিক্ষার্থীদের পাশ করানোর জন্য তারা কোন এমন অভিনব দূনীর্তি করে থাকতে পারেন। ভালুকার কয়েকটি কলেজের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ঘটেছে এমন ঘটনা। সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্ব শরীরে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বরাবর উপস্থিত হয়ে বিচারের দাবী জানিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের আওতায় ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় ভালুকা পরীক্ষা কেন্দ্র—৩ মল্লিকবাড়ি শহীদ নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে অংশগ্রহন করেন ৫৬ জন পরীক্ষার্থী, এর মাঝে মাত্র ১৬ জন কৃতকার্য হয়েছেন।
মানবিক শাখায় অংশ গ্রহণকারী মোছাঃ কাকন আক্তার ৪০৮৭২৪ ও ইসরাত জাহান জেরিন ৪০৮৭২৩ রোল নম্বরে পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। দু’জনেই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন। অপর শিক্ষার্থী কাকন আক্তার তার রোল নাম্বারে অনলাইনে অনুসন্ধান করে দেখেন, নিজের নামের পরিবর্তে সুসং দূর্গাপুর সরকারী মহাবিদ্যালয়ের মাজাহরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থীর নাম আসে। একই ঘটনা ঘটেছে ওই কলেজের ইসরাত জাহান জেরিনসহ ৫১ জন শিক্ষার্থীর। ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মর্নিং সান স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ কয়েকটি কলেজই এ ঘটনা ঘটেছে।
ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হাফিজ উদ্দিন সুমন জানান, এমন ঘটনা তিনি পূর্বে কখনো শুনেননি। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এখন তাদেরকে দায়ী করছেন। অথচ এ সব বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই, সব কিছু বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।
মর্নিং সান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমান জুয়েল জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানে এ বছর ৮১৫ জন পরীক্ষা দিয়েছে। তার মাঝে ৩০-৩৫ জনের এ জাতীয় সমস্যা হয়েছে।
ভালুকা এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র-২, বাটাজোর সোনার বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের সচিব ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল আজিজ জানান, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের কারিগরি ত্রুটির জন্য কিছু সংখ্যক এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের রোল বিভ্রাট দেখা দেয়। বিষয়টি বোর্ড কতৃর্পক্ষ প্রায় দেড়মাস পূর্বে যেসকল পরীক্ষার্থীর রোল নাম্বার পরিবর্তন হয়েছে, তাদের নামে সংশোধিত রোল নাম্বারসহ নতুন প্রবেশপত্র ইস্যু করে ওইসব প্রবেশপত্রসহ চিঠির মাধ্যমে ও সরাসরি বিষয়টি আমাদের প্রত্যেক কেন্দ্র সচিবকে অবহিত করেছেন। আমরাও আমাদের কেন্দ্রের আওতাধীন কলেজ সমূহের প্রধানদের এনে বিষয়টি অবহিতসহ ওইসব প্রবেশ পত্র হস্তান্তর করেছি। কার্যত কোন সমাধান না দেওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর