
আওয়ামী সরকারের পতনের পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যসহ শীর্ষ ব্যক্তিবর্গরা পদত্যাগ করেছেন। যার ফলে ক্লাস-পরীক্ষা, ফল প্রকাশ, মূল সনদ প্রদান, বেতন-ভাতা প্রদানসহ গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে গত কয়েকদিন থেকে ডিনস কমিটির মাধ্যমে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তবে এ নিয়ে কোন সন্তোষজনক উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি শিক্ষকদের। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্বিবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গত রবিবার থেকে শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু নির্দেশনা দেওয়া হলেও ইবির শিক্ষা কার্যক্রম এখনও শুরু করা হয়নি। ডিনরাও এ নিয়ে জরুরি কোন সভাও করছেন না। ডিনস কমিটির মাধ্যমে দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নতুন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তদবির শুরু করেছেন বিশ্বিবিদ্যালয়ের কয়েকজন ডিন। বিএনপিপন্থি শিক্ষক নেতা ও ডিনরা উপাচার্য হতে ক্যাম্পাস ছেড়ে ঢাকায় লবিংয়ে ব্যস্ত আছেন। এছাড়াও বুধবার আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একটি অংশ শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে পদ পদবি নিয়ে সভা করেন। সেখানে একাধিক ডিন ও হল প্রভোস্টদের অংশ নিতে দেখা যায়। অথচ ক্লাস শুরু করার বিষয়ে কোন সন্তোষজনক অবস্থান নিতে দেখা যায়নি ডিন ও শিক্ষকদের। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে।
রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ডিনরা চাইলে মিটিং করে শিক্ষা-কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন। কিন্তু ডিনরা মিটিং না করায় ক্লাস শুরু হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপিপন্থি শিক্ষক বিশ্বিবিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমান ঢাকায় অবস্থান করে ভিসি হওয়ার জন্য লবিং করছেন। তিনি ডিনস কমিটির আহ্বায়ক। এছাড়া জিয়া পরিষদের মহাসচিব ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক এমতাজ হোসেনও ভিসি হওয়ার তদবির করতে ঢাকায় আছেন। সরকার পদত্যাগের পর অনুষ্ঠিত হওয়া দুইটি ডিনস কমিটির মিটিংয়েও তিনি অংশ নেননি। এছাড়া ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফীও ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে তারা লবিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। বাকী ডিনরা আওয়ামীপন্থি হওয়ায় নিজেদেরকে গুটিয়ে রেখেছেন। ফলে শিক্ষাকার্যক্রম নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
ডিনস কমিটির আহ্বায়ক এ কে এম মতিনুর রহমান বলেন, গত পাঁচদিন ধরে আমি ঢাকায় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের টকশোতে অংশ নিচ্ছি। এগুলো তো আর গোপন না, লাইভ প্রচার হচ্ছে। কেউ যদি লবিংয়ের কথা বলে সেটা তাদের ব্যক্তিগত মতামত। আমি আমার জায়গা থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করছি শিক্ষাকার্যক্রম স্বাভাবিক করার। শনিবার ডিন কমিটির সভা ডেকেছি।
কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক এমতাজ হোসেন বলেন, উপাচার্য হওয়ার জন্য ঢাকায় আছি বিষয়টি এমন নয়। আমি শারীরিক অসুস্থতার জন্য ঢাকায় আছি। তাছাড়া এখন তো আমাদের দল ক্ষমতায় নেই, তাহলে কীভাবে আমি উপাচার্য হওয়ার জন্য লবিং করবো? আমি যখন ডিনের দায়িত্ব নিই তখনই প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম শারীরিক অসুস্থতার জন্য কিছু দিন ক্যাম্পাসে ও কিছুদিন ঢাকায় থাকতে হবে। আমি অনুষদের কয়েকটি বিভাগকে ক্লাস শুরু করতে বলেছি ইতোমধ্যেই। ডিনস কমিটির আহ্বায়ক সভা আহ্বান করলে আমি অনলাইনে যুক্ত হবো।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর