
চট্টগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, মিরসরাই ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও কিছু কিছু এলাকায় পানি নামতে শুরু করছে। তবে হাটহাজারীর অনেক এলাকায় এখনো পানি রয়েছে। অনেক মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। এছাড়া বন্যার পানি কমায় বাড়িঘর ও সড়কে ক্ষতচিহ্ন দেখা যাচ্ছে। বাড়ি ও সড়কে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া কৃষি, মৎস্য, মুরগির খামার ও বিদ্যুতের ক্ষতি হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় বন্যায় পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ৫০ হাজার ৭০৬টি। এতে দুই লাখ ৬২ হাজার ৪০০ বাসিন্দা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিরসরাই ও ফটিকছড়ি উপজেলার ৫৯০ কিলোমিটার রাস্তা ও ১২৫টি কালভার্ট। ফটিকছড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৬৫টি নলকূপ ও ১ হাজার ৫৩৭টি ল্যাট্রিন।
ফটিকছড়ির উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমনের বীজতলা, গ্রীষ্মকালীন সবজি ও পুকুরের মাছ। আমনের ৮০% বীজতলা পানির ভেতর নিমজ্জিত হয়েছে। ৫০ শতাংশ ফলন নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলায় আনুমানিক ৪ হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাটহাজারীর দায়িত্বপ্রাপ্ত এসডি মো. সোহাগ তালুকদার বলেন, হালদা নদীর বাঁধের পাশে শোল্ডার করার সময় স্থানীয়রা বাধা প্রদান করায় ফরহাদাবাদে বাঁধ ভেঙে গেছে। বাঁধের দুদিক থেকে শোল্ডার করা হলে এমন অবস্থা হতো না। ছালে আহাম্মদ দফাদার বাড়ির ওই স্থানে যার ঘর ছিল তিনি শোল্ডার করতে বাধা দিয়েছিলেন। ফলে এই ভাঙন।
জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সাদি উর রহিম জাদিদ জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৯৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। এরমধ্যে কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৯ হাজার ৬৭ জন। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে মজুদ রয়েছে ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও ৩৫ লাখ টাকা। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর জন্য মজুদ রাখা আছে ৯০৫ মেট্রিক টন চাল ও ২৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৩৯৫ মেট্রিক টন চাল ও নয় লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি শুকনো খাবারও দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ থাকার পরও পানি বেশি হওয়ায় কয়েকটি স্থানে আমাদের ত্রাণ পৌঁছাতে কষ্ট হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ স্থানে পৌঁছানো হচ্ছে।
এদিকে, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং চট্টগ্রাম ও নাজিরহাট রুটে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন ও বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জ্বালানিবাহী একটি ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে যথাক্রমে ক্যাম্পাস ও দোহাজারীর উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এছাড়া সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন ছেড়ে আসবে। এ ছাড়া সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় নাজিরহাট লোকাল ট্রেন চলার কথা রয়েছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর