
কেজি প্রতি ১৫ টাকা দরের ৩০ কেজি বরাদ্দকৃত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির প্রায় দুইশত কার্ডধারীকে চাল না দিয়ে অন্যথায় বেশি দামে চাল বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে চরফ্যাশন উপজেলার আবুবকরপুর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার মো. মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে এলাকাবাসীসহ ইউনিয়ন দফাদার তল্লাশি চালিয়ে আবুবকরপুর ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ডে একটি বাড়ির তিনটি ঘর থেকে ১২ বস্তা চাল উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় বুধবার রাত ১০টার দিকে আবুবকরপুর ইউনিয়নের রৌদ্রেরহাট বাজারে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ করে বিক্রি করায় ডিলারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী। তবে তদন্তে প্রমাণিত হলে ডিলারের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক।
জানা যায়, মঙ্গলবার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৫ ওয়ার্ডে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের মাঝে চাল বিতরণ করেন। বাকি ৩ ওয়ার্ডে ৩০ অক্টোবর বুধবার চাল বিতরণকালে প্রায় দুইশত সুবিধাভোগী চাল নিতে আসলে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলার মো. মহিউদ্দিন চাল দিতে পারেনি। চাল না পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন সুবিধাভোগীসহ এলাকাবাসীরা। পরে তার বিরুদ্ধে চাল বিক্রির অভিযোগ এনে বুধবার রাত ১০ টার দিকে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডিলার মহিউদ্দিনসহ তার লোকজন প্রায় ২০০ সুবিধাভোগীর নামের চাল অন্যথায় বিক্রি করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে আবুবকরপুর ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ডে রাড়ি বাড়ির তিনটি ঘরে ১২ বস্তা চাল উদ্ধার করেন এলাকাবাসী ও ইউনিয়ন দফাদার। এই ঘটনায় রৌদ্রেরহাট বাজারে সুবিধাভোগীসহ এলাকাবাসী চাল বিক্রির ঘটনায় ডিলারের বিরুদ্ধে রৌদ্রেরহাট বাজারে বিক্ষোভ করেন।
সুবিধাভোগী রিনা বেগম জানান, তার নামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির একটি কার্ড রয়েছে। বিগত সময়ে সে চাল পেয়েছিল। ৩০ অক্টোবর রৌদ্রেরহাট বাজারে ডিলার মহিউদ্দিনের কাছ থেকে চাল আনতে গেলে সে চাল না পেয়ে খালি হাতে বাসায় ফিরে আসে। এসময় ডিলারের বিচারের দাবি জানান।
আবুবকরপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামী'র সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন জানান, আবুবকরপুর ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি চালের ডিলার মহিউদ্দিন প্রায় ২০০ সুবিধাভোগীর চালের নাম আত্মসাৎ করে বিক্রি করে ফেলেছে। এলাকাবাসীসহ ইউনিয়ন দফাদার আবুবকরপুর ৭ নং ওয়ার্ডের রাড়ি বাড়ির তিনটি ঘর থেকে ১২ বস্তা চাল উদ্ধার করেন। এই ঘটনায় বুধবার রাত ১০ টার দিকে ডিলার মহিউদ্দিনের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসীসহ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডধারীরা।
অভিযোগ সম্পর্কে ডিলার মহিউদ্দিনের কাছ থেকে জানতে চাইলে, সে চাল বিক্রির বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে ফোনটি কেটে দেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দিক জানান, সরজমিনে তদন্ত চলছে। চাল বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে শোকজ করে তার ডিলার নিয়োগ বাতিল করে আইনের আওতায় আনা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরিন হক জানান, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাকে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। চাল বিক্রির বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হলে ডিলারের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামীলীগ সরকারের পদত্যাগের পর চরফ্যাশন উপজেলার আবুবকরপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালের ডিলারের নিয়োগ বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ওই ইউনিয়নে মো. মহিউদ্দিন নামের একজনকে চালের ডিলার নিয়োগ করা হয়। ডিলার মহিউদ্দিনকে ৬৩৯ নামের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের ৩৮ হাজার ৩৪০ কেজি চালের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর