
দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সোমবার (৫ মে) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “উত্তেজনা এখন সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং পরিস্থিতি অত্যন্ত ‘উত্তপ্ত’ হয়ে উঠেছে।”
তিনি বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে সামান্য একটি ভুল সিদ্ধান্তই ভয়াবহ সংঘাত ডেকে আনতে পারে। তাই এখন সময় যুদ্ধের পথ থেকে সরে এসে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর।”
মহাসচিব ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত হামলার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “আমরা এই সন্ত্রাসী হামলার কঠোর প্রতিবাদ জানাই এবং দোষীদের আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, ওই হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ২৬ জন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। এটিকে ২০০০ সালের পর কাশ্মীর অঞ্চলে অন্যতম প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। হামলার জন্য প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তবে ইসলামাবাদ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
উত্তেজনার জেরে দুই দেশের সীমান্তে সেনা মোতায়েন জোরদার করা হয়েছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে ‘অপারেশনাল ফ্রিডম’ দিয়েছেন, অন্যদিকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীও ‘তাৎক্ষণিক জবাব’ দেওয়ার প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছে। গত কয়েক দিনে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান।
বিশ্লেষকদের মতে, এই উত্তেজনা শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককেই নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলতে পারে। ক্রেডিট রেটিং সংস্থা Moody's জানিয়েছে, সীমান্ত উত্তেজনা পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “এই সংকটপূর্ণ সময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত দুই দেশের প্রতি শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর আহ্বান জানানো।”
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর