
চাঁদার দাবিতে ট্রাক্টর চালক ছোট ভাই মো. হারুন (২৬) কে হাত বাঁধা অবস্থায় আটকে রাখে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা। খবর পেয়ে বড় ভাই আব্দুর রহমান (৩৭) ঘটনাস্থলে আসলে তিনি ও তার ছোট ভাই বেধরক মারধরের শিকার হন। এ ঘটনায় সামাজিকভাবে বিচার না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বড় ভাই।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী ইউনিয়নের পারতিল্লি এলাকায় ২৯ মে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী দুজনই ওই এলাকার মো. আফসার আলীর ছেলে।
ঘটনার বর্ণনা জানিয়ে ভুক্তভোগী, হাইড্রোলিক ট্রাক চালক হারুন বলেন, ২৯ মার্চ রাত দশটার দিকে আমি ট্রাক্টর চালিয়ে বাড়ির দিকে ফিরছিলাম। পারতিল্লি এলাকার জোউলার মোড় নামক স্থানে পৌঁছালে শাওন নামের একজন ছেলে গাড়ির সামনে এসে থামাতে বলে এবং চাবি নিয়ে যায়। পরে আমাকে মাটির ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এবং আমার বড় ভাইকে টাকা নিয়ে আসতে বলে। এরপর আমার হাত বেঁধে ফেলে এবং আমার ফোন দিয়ে ভাইকে কল করতে বলে।
আমার বড় ভাই এসে আমাকে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশ সহযোগিতা নেবার কথা জানান। তখন শাহ্ আলম ও কামরুলের নেতৃত্বে ৮-১০ জন আমাকে এবং আমার ভাইকে বেধরক মারধর করে। এরপর আবারও আমাকে এবং আমার ভাইকে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখে। পরে আমাদের সমাজের লোকজন এসে সেখান থেকে আমাদের ছাড়িয়ে নেয়।
তিনি আরও জানান, তিনি মাটি বহনকারী গাড়ি চালান এবং যেখানে কাজ করেন, সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বাড়ি আসার সময় ট্রাক খালি না রেখে মাটি কিনে এলাকার বাজারে কিছুটা দামে বিক্রি করেন। যেহেতু তিনি মাটির গাড়ি চালান, তাই এলাকার অনেকেই তাকে এক-দুই ট্রাক মাটি এনে দিতে বলে। এর আগেও তার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা চাঁদা নেয়া হয়েছিল। বলেছিল, "এলাকায় মাটি ঢুকলে চাঁদা দিতে হবে।"
এ ঘটনায় সামাজিকভাবে বিচার না পেয়ে সাত দিন পর থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান। অভিযুক্তরা হলেন: তিল্লী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি কামরুল ইসলাম (৪০), সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রিপন (৩২), সাটুরিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল (২৮), সাটুরিয়া থানা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব উজ্জ্বল হোসেন (৩৩), জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ্ আলম (৩২)।
অভিযোগের বিষয়ে তিল্লী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি কামরুল ইসলাম বলেন, "এলাকার উঠতি বয়সের ছেলেরা মাটির ট্রাকসহ হারুন নামের এক চালককে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। সেসময় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। স্থানীয় হিসেবে আমরা উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করে তাদের মুরুব্বিদের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করি। এই ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে প্রবাহিত করে আমাদের সম্মানহানি করার চেষ্টা চলছে। চাঁদা দাবির ঘটনা পুরোপুরি মিথ্যা।"
এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীনুল ইসলাম বলেন, "এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ এসেছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।"
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর