
পাবনায় মেঘনা এমসিসিএস লিমিটেড নামে একটি এনজিও’র মালিক আব্দুল কাইয়ুম ও তার স্ত্রী রঞ্জনা খাতুন গ্রাহকদের সঞ্চয় ও ডিপিএস এর নামে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। এ ঘটনায় গত তিন মাস ধরে তারা পলাতক রয়েছেন এবং তাদের অফিসও তালাবদ্ধ হয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী নারীরা জানাচ্ছেন, ২০১১ সালে পাবনা শহরের দিলালপুরে মেঘনা এমসিসিএস লিমিটেড এনজিওটি প্রতিষ্ঠা করেন কাইয়ুম এবং তার স্ত্রী রঞ্জনা খাতুন। তাঁরা গ্রামীণ নারীদের সঞ্চয় ও ডিপিএসের মাধ্যমে তাদের টাকা দ্বিগুণ হওয়ার প্রলোভন দিয়ে জমা নিতে শুরু করেন।
এনজিওটির মাধ্যমে স্থানীয় নারীরা তাদের সঞ্চিত অর্থ জমা করতে শুরু করেছিলেন, বিশেষ করে যারা দরিদ্র ছিলেন। কিন্তু তিন মাস আগে, যখন গ্রাহকরা তাদের সঞ্চিত টাকা ফেরত চাইতে গিয়েছিলেন, তখন কাইয়ুম তাদের তালবাহানা করতে শুরু করেন এবং অবশেষে একসময় তিনি ও তার স্ত্রী অফিস তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান। বর্তমানে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ২৫০ জনের ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা নিয়ে তারা পলাতক।
ভুক্তভোগীরা জানান, তারা অনেক কষ্টে উপার্জিত টাকা এনজিওতে জমা করেছিলেন। কাইয়ুম ও তার স্ত্রীর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এবং অফিস বন্ধ থাকায় তারা টাকা ফেরত পাবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। ভুক্তভোগী আফসানা খাতুন বলেন, “আমার জমা দেওয়া ২৩ লাখ টাকা নিয়ে কাইয়ুম পালিয়েছে। তার ফোন বন্ধ, অফিস তালা। এখন আমার টাকা কিভাবে ফিরে পাবো, জানি না।”
এছাড়া এনজিওটির মাঠকর্মী সুলতানা খাতুন বলেন, “আমি বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে মহিলাদের এই এনজিওতে টাকা জমা করাতে সহায়তা করেছি, এখন সেই টাকার দায় আমার উপর পড়ে গেছে।”
পাবনার লস্করপুর এলাকার রেহেনা খাতুন তার দুই মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা হারিয়ে উদ্বিগ্ন। ময়না খাতুন নামক আরেক ভুক্তভোগী বলেন, “আমার পরিবারের ৪ জন সদস্যের নামে মোট ১৫ লাখ টাকার ডিপিএস করেছিলাম। এখন কিভাবে সেই টাকা পাবো?”
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, "এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। যদি অভিযোগ আসে, তবে আমরা খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেব।"
এনজিওটির প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অফিস তালাবদ্ধ এবং মালিকের ফোনও বন্ধ। গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর