জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) দীর্ঘ ছয় বছর পর দিনব্যাপী চতুর্থ সংগীত উৎসবের আয়োজন করেছে সংগীত বিভাগ। উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য ছিল “সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ।” শিক্ষার্থীরা দিনব্যাপী গানের মাধ্যমে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

উৎসবটি সংগীত বিভাগের সদ্য প্রয়াত শিক্ষার্থী প্রত্যাশা মজুমদারকে উৎসর্গ করা হয়। বিজ্ঞান ভবনের মাঠে অনুষ্ঠিত এই উৎসবের সূচনা হয় সকালে একটি সেমিনারের মাধ্যমে। সেমিনারটি ছিল 'সার্বিক স্বরূপ সমীক্ষণ: সংগীত ও সংবিৎ' শীর্ষক, যেখানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. আলী এফ. এম রেজোয়ান।

আলোচনায় অংশ নেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মাদ আলী নকী, এবং সঞ্চালনা করেন সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো মাহমুদুল হাসান। সেমিনারটি শেষে প্রতিটি অধিবেশনে পরিবেশিত হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন, যেখানে ছাত্ররা বিভিন্ন ধরনের সংগীত পরিবেশন করে—রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, দেশাত্মবোধক গান, এবং উপশাস্ত্রীয় সংগীত।

বিকেল ৩টায় দ্বিতীয় অধিবেশনের শুরুতে, প্রয়াত প্রত্যাশা মজুমদার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের পর ‘ধ্বনিল আহ্বান’ এবং ‘ও আলোর পথযাত্রী’ গান পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও, ‘সাগর বাউল’ এবং ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ সংগীতগুলি সম্মেলক পরিবেশনায় পরিবেশিত হয়।

শিল্পী শাহীন সামাদ-কে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়, এবং সাংস্কৃতিক পর্বে অংশগ্রহণ করেন শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল, লাইসা আহমদ লিসা, প্রিয়াংকা গোপ, সাগর দেওয়ান সহ আরও অনেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, “তোমরা কখনও স্বার্থপর হয়ো না। অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু পরিবারের সদস্যদের জন্য চিরদিনের বেদনা বয়ে আনে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেদিকে সচেষ্ট থাকতে হবে।”

উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই-পরবর্তী সময়ে দেশে মুক্ত ও সৃজনশীল পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের সমৃদ্ধ দেশীয় সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে পারব।” তিনি আরও বলেন, “সংগীত শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি জাতির প্রেরণার উৎস। মহান মুক্তিযুদ্ধে এবং জুলাই বিপ্লবে সংগীতের শক্তিই আমাদেরকে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছে, ঐক্যবদ্ধ করেছে।”

এদিনের উৎসবের সমাপনী পর্বে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়, যা অনুষ্ঠানের শেষ হয়।

সালাউদ্দিন/সাএ