
কক্সবাজার সদরের খরুলিয়ায় বাঁকখালী নদীতে গোসল করতে নেমে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তরুণের নাম মাহিদ হাসান ছিদ্দিক সেজাদ (২১)। নিখোঁজ হওয়ার আড়াই ঘণ্টা পর তার নিথর দেহ উদ্ধার হলে কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার, স্বজন আর এলাকাবাসী।
মাহিদ ঝিলংজা ইউনিয়নের খরুলিয়া ঘাটপাড়ার ব্যবসায়ী হারুনুর রশিদের ছেলে। শান্ত-সৌম্য, ভদ্র এই তরুণের অকাল মৃত্যু কেউই যেন মেনে নিতে পারছেন না। স্থানীয়রা বলছেন, এমন মৃত্যুতে পুরো এলাকাই আজ স্তব্ধ।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে বাড়ির পাশের বাকঁখালী নদীতে গোসল করতে নামেন মাহিদ। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও মাহিদ ফিরে না আসায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল প্রায় ঘণ্টা খানেক তল্লাশি চালিয়ে নদীর এক কোণা থেকে মাহিদের নিথর দেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদ বলেন, “আমরা প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারিনি। ওর মতো ছেলে খুব কম দেখা যায়- ভদ্র, নম্র, পরিশ্রমী। এলাকার সবাই তাকে ভালোবাসতো। এই শোক শুধু তার পরিবারের নয়, আমাদের সবার।”
মাহিদের সবচেয়ে কাছের বন্ধু রিফাত ইসলাম ভেঙে পড়া কণ্ঠে বলেন, “ভাইরে, ওর সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল সকালে। বলেছিল দুপুরে গোসল সেরে বিকেলে আড্ডা দিব। কে জানতো, এটাই ওর শেষ কথা হবে! আমরা এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না।”
স্থানীয় কলেজছাত্রী আরিফা সুলতানা বলেন, “মাহিদ ছিল খুব ভালো মনের মানুষ। কারো সঙ্গে উঁচু স্বরে কথা বলতে শুনিনি কখনো। ও চলে যাওয়ায় মনে হচ্ছে, এলাকার একটা শান্ত নির্ভরতা হারিয়ে গেল।”
ঘাটপাড়ার দোকানদার আজিজ সওদাগর বলেন, “প্রতিদিন দোকানের সামনে দিয়ে হাসিমুখে যেত। বলত, 'চাচা দোয়া করবেন'। আজও সে আসবে মনে হচ্ছে, কিন্তু জানি সে আর আসবে না।”
এদিকে সম্ভাবনাময়ী এই তরুণের মৃত্যুর খবরে মুহূর্তেই ভিড় জমে তার বাড়িতে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু, প্রতিবেশীরা সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। মাহিদের মা বারবার ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে বলছিলেন, “আমার মাহিদকে ফিরিয়ে দাও। ও তো কিছু খারাপ করে নাই।”
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর