
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নোয়গ্রাম ইউনিয়নের শামুকখোলা গ্রামের সালমান খন্দকার (২৪) হত্যার ঘটনার মামলায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম মসিয়ার মোল্যা (৪০)। নিহতের ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত রবিবার (১১ মে) রাতে মামলার এজাহার নামীয় ১৭নং আসামি মসিয়ার মোল্যাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার মসিয়ার উপজেলার শামুকখোলা গ্রামের মান্নান মোল্যার ছেলে।
সোমবার (১২ মে) বিকালে নড়াইল জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়-,নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার শামুকখোলা গ্রামে পূর্ব শত্রুæতাকে কেন্দ্র করে আসামিদের সাথে সালমান খন্দকারের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দীর্ঘদিন ধারে গ্রাম্য ও সামাজিক দলাদলি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ মে সালমান খন্দকার নামের যুবককে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যার করে। ইতিপূর্বে এলাকায় উল্লিখিত আসামিদের বিরুদ্ধে নাশকতা মামলা হয়। নাশকতা মামলায় আসামি শ্রেণীভুক্ত হওয়ায় তাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হইয়া থাকে। গত বৃহস্পতিবার ৮মে আনুমানিক রাত ১০টার দিকে গ্রেফতারকৃত আসামিসহ এজাহারনামীয় আসামিগণ নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের আড়পাড়া সাকিনস্থ কালুর ইট ভাটায় ভিকটিম সালমান খন্দকারকে হত্যা করিবার জন্য পরিকল্পনা করে।
গত বৃহস্পতিবার ৮ মে আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে আসামি ফরিদ আলী, সন্তু কাজী, কালাম কাজী, আলিম কাজী, অছি কাজীগণ বাদীর বাড়িতে আসিয়া বাদীর ভাই সালমানকে বলে বালি বেচা-কেনা নিয়ে জরুরি কথা আছে, কালুর ইট ভাটায় একটা জরুরি মিটিং আছে। তখন সালমান খন্দকার সরল বিশ্বাসে ব্যবসায়িক কাজের বিষয়ে আলোচনার জন্য আসামিদের সাথে সালমান খন্দকার এর সাথে থাকা কাজী মশিয়ার রহমান পিন্টুর মোটর সাইকেল যোগে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ২ঘন্টা অতিবাহিত হইবার পর বাদী তার ভাই সালমানের মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ করে না। তখন তাদের সন্দেহ হয় এবং বাদী উল্লিখিত আসামিদের বাড়িতে ঐ রাতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে আসামিদের বাড়িতে পায় না এবং তাহাদের ফোন বন্ধ বলিয়া তাহাদের বাড়ির মহিলারা জানায়। বাদী তার চাচা রিপন খন্দকার, মুকুল খন্দকার, মনির খন্দকারদের লইয়া কালুর ইট ভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় সালমানকে খোঁজাখুজি করিয়া কোথাও পায় না। পরবর্তীতে গত শুক্রবার ৯ মে সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাদী লোক মারফত জানতে পারে তার ভাইয়ের লাশ রক্তাক্ত জখম অবস্থায় আড়পাড়া কালুর ইটের ভাটার দক্ষিণে সৈয়দ ওমর আলির জমিতে পড়িয়া আছে। তখন বাদীসহ তার পরিবারের লোকজন লাশের খবর পাইয়া দৌড়াইয়া আড়পাড়া সাকিনস্থ ৫৬নং কাওলিডাঙ্গা মৌজায় সৈয়দ ওমর আলির জমিতে আমার ভাইয়ের লাশ দেখতে পায়।
স্বগ্রামী মৃত সবুজ খন্দকারের ছেলে বেলায়েত খন্দকার জানায়, তার পুত্র আব্দুল্লাহ খন্দকার সহ মোটর সাইকেল যোগে গত ৮ মে দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টার দিকে শুলটিয়া গ্রাম হইতে নিজের বাড়িতে কালুর ইটের ভাটার পার্শদিয়া আসর সময় মটর সাইকেলের আলোতে দেখতে পায় গ্রেফতারকৃত আসামি মশিয়ার মোল্যাসহ এজাহারনামীয় আসামিরা ও অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা দেশীয় মারাত্মক অস্ত্রাদি সহ বৈঠক করছে।
তখন বেলায়েত খন্দকার কোন কিছু জিজ্ঞাসা করিবার পূর্বে আসামীরা বলে, “আজ যা দেখিলি তা প্রকাশ করিলে খুন হইয়া যাবি”। তিনি প্রাণ ভয়ে রাতে উক্ত কথা কাউকে ভয়ে বলিতে পারি নাই মর্মে জানায়। গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানানো হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
নিহতের ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের পর লোহাগড়া থানার এসআই তারক বিশ্বাস সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান চালিয়ে গত রবিবার (১১ মে) শামুকখোলা গ্রামের মান্নান মোল্যার ছেলে মসিয়ার মোল্যাকে নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করে। আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে জেলা পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর