
কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়ক পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ হলেও রাত নামার পর এই পথ পরিণত হচ্ছে সংঘবদ্ধ মাদক চক্রের 'নিরাপদ করিডোরে'। স্থানীয়দের অভিযোগ, টেকনাফের একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে সাগরপথে ইয়াবা পাচারে জড়িত এবং রাতভর কোটি টাকার মাদক কারবার চলছে প্রশাসনের চোখের সামনে।
বাহারছড়া ও মহেশখালিয়ার একাধিক ঘাট ব্যবহার করে ইয়াবা আসছে বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সীমান্তে তৎপরতা বাড়লেও সমুদ্রপথ এখন সবচেয়ে সক্রিয় রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই চক্রের প্রভাব এতটাই বিস্তৃত যে, অনুমতি ছাড়া কোনো ট্রলার সাগরে নোঙরও করতে পারে না।
সূত্রমতে, অন্তত ছয়জন প্রভাবশালী স্থানীয় ব্যক্তি এই চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যারা একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে আসলেও এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসনের নিরবতা এবং রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ার কারণে তারা দিন দিন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন।
এই চক্রের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে—তারা ইয়াবা পাচারের পাশাপাশি মালয়েশিয়াগামী মানবপাচার এবং রাখাইন রাজ্যের সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছেও সাগরপথে সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের পাশে একটি অভিজাত রেস্তোরাঁ, যেটি এখন ‘মাদক সিন্ডিকেটের ওয়ার রুম’ হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, অভিযান চালালে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের কারণে তা মাঝপথেই থেমে যায়। একাধিক ব্যবসায়ী ও মৎস্যজীবীর বক্তব্যে উঠে আসে, সন্ধ্যার পর মেরিন ড্রাইভের পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে ওঠে এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে স্থানীয়রাও চুপ থাকতে বাধ্য হন।
অভিযুক্তদের একজনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং সাংবাদিককে ‘তথ্যদাতার নাম’ জানাতে বলেন। ফোনালাপে অন্যদের কণ্ঠও শোনা যায়, যা এই গোষ্ঠীর সংগঠিত ও শক্তিশালী অবস্থান নির্দেশ করে।
বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ খবর
এক্সক্লুসিভ এর সর্বশেষ খবর