
এখন থেকে কক্সবাজারে বসবাসরত নাগরিকদের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে আর থানায় ছুটতে হবে না। ঘরে বসেই, দিনে কিংবা রাতে, এমনকি ছুটির দিনেও করা যাবে অনলাইন জিডি।
শুক্রবার (১৬ মে) থেকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের ‘অনলাইন জিডি প্ল্যাটফর্ম’ চালু হওয়ার মাধ্যমে এই নতুন সুবিধা মিলছে। প্রথম ধাপে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অধীন কক্সবাজার জেলা এবং সিএমপিতে এই উদ্যোগ চালু করা হয়েছে। ধীরে ধীরে এটি সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
এ সম্পর্কে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরি বলেন, “নাগরিকরা প্লে-স্টোরে গিয়ে ‘Online GD’ অ্যাপটি ডাউনলোড করে সহজেই জিডি করতে পারবেন। মোবাইল নম্বর ও এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন করে জিডির ধরন, স্থান, সময় ও ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রয়োজনীয় ছবি বা ডকুমেন্ট সংযুক্ত করলেই জিডি সম্পন্ন হবে।”
জিডি জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইলে একটি ট্র্যাকিং নম্বর পাঠানো হবে, যার মাধ্যমে জিডির অগ্রগতি জানা যাবে।
মোবাইল, এনআইডি, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স হারানো, হুমকি পাওয়া বা নিরাপত্তা শঙ্কা, মেয়ে বা নারী নিখোঁজ, সন্দেহজনক ব্যক্তি বা ঘটনা, অশ্লীল বা হয়রানিমূলক বার্তা ও কল, অন্যান্য তথ্যগত সাধারণ অভিযোগ।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফউদ্দীন শাহীন বলেন, “অনলাইন জিডি চালুর মাধ্যমে পুলিশি সেবা এখন নাগরিকদের দোরগোড়ায়। সময়, খরচ ও হয়রানি- সব কিছুই কমবে। আমাদের লক্ষ্য হলো প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করা।”
তিনি আরও জানান, প্রতিটি অনলাইন জিডি সরাসরি সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে পৌঁছাবে। প্রয়োজনবোধে থানা পুলিশ জিডি দাতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে।
কক্সবাজার শহরের শিক্ষক রাশেদুল হক বলেন, “এটা নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। থানায় গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার দিন শেষ- এটাই চাই ছিলাম আমরা।”
এনজিওকর্মী তামান্না আফরিন বলেন, “নারী হিসেবে অনেক সময় থানায় গিয়ে জিডি করা কঠিন হয়ে পড়ে। অনলাইনে এই সুযোগ পেয়ে আমি আশ্বস্ত বোধ করছি।”
এদিকে স্থানীয় সাংবাদিক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, “এই প্ল্যাটফর্ম কেবল নাগরিক সেবা নয়, পুলিশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার এক নতুন দিগন্ত।”
সারসংক্ষেপে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে কক্সবাজার জেলা পুলিশের এই উদ্যোগ একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এটি শুধু প্রযুক্তির ব্যবহার নয়, বরং জনগণের প্রতি পুলিশি সেবার মনোভাব পরিবর্তনের দিকেও এক দৃঢ় অঙ্গীকার। এমনটাই মনে করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর