
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর এবং একজনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে মানিকগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক।
অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন মানিকগঞ্জ সরুপাই আলহাজ আব্দুল হালিম দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ইউসুফ আলী (৫৫)। তিনি সদর উপজেলার বেতিলা গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালেব মোল্লার ছেলে।
লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বুলবুল (১৪) ও তার বন্ধু রাফি (১৪) প্রতিদিনের মতো ২৮ মে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে সাইকেলে মাদ্রাসায় যাচ্ছিলেন। পথে অধ্যক্ষ তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে তারা মাদ্রাসায় পৌঁছালে অধ্যক্ষ তাদের দুজনকে চর-থাপ্পড় মারেন এবং বাঁশের বেত দিয়ে বুলবুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটান। এতে বুলবুলের দুই পায়ে ও শরীরে গুরুতর নীলাফুলা জখম হয়।
রাফি বুলবুলকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও বেত দিয়ে মারধর করা হয় এবং গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
পরবর্তীতে তারা বাড়ি ফিরে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানালে বুলবুলকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
২০১৩ সালের শিশু আইনের ৭০ ধারা অনুযায়ী, শিশু নির্যাতন করলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড। আর ধারা ৮৬ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক শাস্তি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
২০১১ সালের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক ও মানসিক শাস্তি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, 'একজন শিক্ষক কখনোই এভাবে ছাত্রকে মারতে পারেন না। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।'
জানতে চাইলে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ইউসুফ আলী বলেন, 'নবম শ্রেণীর ঐ দুই শিক্ষার্থী তাদের এক মেয়ে সহপাঠীকে উত্ত্যক্ত করতো এই ঘটনায় তাদের আমি শাসন করেছি এবং স্ব-স্ব পরিবারকে অবহিত করেছি। আমি প্রতিষ্ঠানের প্রধান যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় এড়াতে আমারতো শাসন করা অন্যায় হয়নি। এখন তারা কি মনে করে থানায় অভিযোগ করল আমার জানা নেই। আমি ওই দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি।'
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, 'অভিযোগটি পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর