
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে গ্রীষ্মকালীন সবজি, আউশ ধানের বীজতলা ও রোপা আউশ ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ১২০ হেক্টর। এর মধ্যে ১ হাজার হেক্টর জমিতে শসার আবাদ করা হয়েছিল।
এছাড়া ২৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ করা হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে ১৪৪ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন সবজি, ৩৪ হেক্টর আউশের বীজতলা ও ১০৫ হেক্টর রোপা আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় ৩ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৪ কোটি টাকা।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রীষ্মকালীন সবজির মধ্যে শসা, করলা, লাউ, চিচিঙ্গা, পেঁপে ও মরিচসহ বিভিন্ন সবজি বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া আউশ ধানের বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় চাষের শুরুতেই কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। অনেক জায়গায় রোপা আউশ ধানের চারা পচে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল্লাহ জানান, ১ একর ৬০ শতাংশ জমিতে শসা চাষে তার ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিনি এই চাষ করেছিলেন। ভারী বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তার জমির শসা ক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
আরেক কৃষক মো. রফিক জানান, এক একর বিশ শতাংশ জমিতে করলা ও চিচিঙ্গা চাষ করেছিলেন। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তার সব গাছ ও ফসল পচে গেছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলেন, এখন ঋণ পরিশোধের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
আউশ ধান চাষী রুবেল জানান, ৫ একর জমিতে আউশ ধান চাষ করেছিলেন। দুর্যোগের কারণে তার ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। চাষের আয় দিয়ে তার সংসার চলতো এবং সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ যোগানো হতো। ফসলহানীর কারণে তিনি সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাজমুল হুদা জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে চরফ্যাশন উপজেলায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি, বিশেষ করে শসা, করলা ও চিচিঙ্গাসহ বেশ কিছু সবজি এবং আউশ ধানের বীজতলাসহ সদ্য রোপণকৃত আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকদের পাশে থেকে এ বিষয়ে কাজ করছে। কৃষকরা যাতে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে, সেজন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর