
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ১০৪ বছর পেরিয়ে আজ ১০৫ বছরে পদার্পণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ও হোস্টেলগুলো থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের শোভাযাত্রা সহকারে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে সমবেত হন। এরপর উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সম্মুখস্থ পায়রা চত্বরে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন এবং কেক কাটার মাধ্যমে দিবসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপাচার্য। অনুষ্ঠানে সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন। বিদেশি শিক্ষার্থীরাও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় টিএসসি মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রতিপাদ্যভিত্তিক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস. এম. এ ফায়েজ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার শুরুতে ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান তাঁর শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, "দেশের যেকোন ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে এই প্রতিষ্ঠান নেতৃত্ব দিয়েছে। ৫২, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এই বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিয়েছে। আমরা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই।"
তিনি আরও বলেন, "পড়াশোনা ও গবেষণাকে আমরা রাজনৈতিক মতাদর্শের দলাদলির বাহিরে রাখতে চাই। একই সঙ্গে রাজনীতি যেন বিশ্ববিদ্যালয়মুখী হয়, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য রাজনীতি থাকবে কিন্তু বহিস্থ বিভিন্ন হস্তক্ষেপে পরিচালিত না হয়।"
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অধ্যাপক ইউনূস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গবেষণার পরিসর আরও সম্প্রসারণ এবং গবেষণালব্ধ অর্জিত জ্ঞান দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৮৪টি বিভাগ, ৬০টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র এবং ছাত্রছাত্রীদের ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল ও ১৩৮টি উপাদানকল্প কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪৬ হাজার ১৫০ জন এবং পাঠদান ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৮ জন শিক্ষক।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস বন্ধ ছিল। তবে পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষাসমূহ যথারীতি অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিরাপত্তা ও শোভাযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নীলক্ষেত ও ফুলার রোড সংলগ্ন প্রবেশ পথে যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর