
বগুড়ার নন্দীগ্রামে যৌতুকের দাবিতে রুমকি বেগম (৩৫) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর পেটে লাথি মেরে গর্ভের সন্তানকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রুমকি বেগম গত ২৯ জুন নন্দীগ্রাম থানায় স্বামী আমিনুল ইসলামসহ শ্বশুরবাড়ির সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমিনুল ইসলাম উপজেলার থালতা মাঝগ্রাম গ্রামের একরাম হোসেনের ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রুমকি বেগম নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও জাদুঘর গেটের নিহার পালের মেয়ে। তিনি পূর্বে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন। আমিনুল ইসলাম ও রুমকি বেগম উভয়েই বিবাহিত ছিলেন এবং তাঁদের আগের সংসারে ছেলে-মেয়ে রয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে রুমকি বেগম হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং আমিনুল ইসলামের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য রুমকি বেগমকে নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতন থেকে বাঁচতে তিনি শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে এ পর্যন্ত ৩ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। তার পরেও নির্যাতন থামেনি। গত ২৭ জুন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন রুমকির চুলের মুঠি ধরে পেটে লাথি মারে ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে জখম করে। প্রতিবেশীরা তাঁর চিৎকার শুনে এসে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুমকি বেগম জানতে পারেন, পেটে লাথি মারার কারণে তাঁর পেটের সাড়ে তিন মাসের সন্তান মারা গেছে।
এ বিষয়ে রুমকি বেগম বলেন, "আমি গর্ভবতী জানা সত্ত্বেও স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাকে অমানবিক নির্যাতন ও মারধর করেছে। পেটে লাথি মারার কারণে আমার সাড়ে তিন মাসের বাচ্চা মারা গেছে। আমার পেটে জন্ম নেয়া শিশু কি অন্যায় করেছে? তারা আমার সন্তানকে মারলো কেন? একজন মা হিসেবে আমি আমার সন্তানের অপমৃত্যুর সাথে জড়িত সবার শাস্তি চাই।" তিনি আরও জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজন এর আগেও তাঁকে মারধর করেছে এবং এ বিষয়ে তিনি থানায় চারটি অভিযোগ করেছেন।
রুমকি বেগমের স্বামী আমিনুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি একটি মিথ্যা অভিযোগ এবং বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাহারুল ইসলাম জানান, যৌতুক দাবিতে নির্যাতন ও পেটে লাথি মেরে সন্তান হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি নিজ এলাকায় চলে গেছেন। তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে মামলা রেকর্ড করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর