বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে ছাত্রদলের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ফজলুর রহমান বলেছিলেন, ‘হাসিনা খারাপ, আওয়ামী লীগ খারাপ না।’ এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি নুসরাত জাহান।

সোমবার নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে নুসরাত এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে নুসরাত বলেন, “সম্প্রতি বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা ফজলুর রহমান বলেছেন: ‘হাসিনা খারাপ, আওয়ামী লীগ খারাপ না।’ এই বক্তব্য আমাদের কাছে বিভ্রান্তিকর এবং ইতিহাস ও বাস্তবতার পরিপন্থী মনে হয়েছে। যে আওয়ামী লীগ ১/১১ থেকে শুরু করে গণতন্ত্র হত্যার সমস্ত অপকর্মের নেতৃত্বে ছিল, যারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে একযোগে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করতে চেয়েছে, তাদের দায়ভার কেবল একজন ব্যক্তির (হাসিনা) ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া রাজনৈতিক অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।”

তিনি আরও বলেন, “কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে আমি এই ধরনের বক্তব্যকে ঘোরতর প্রত্যাখ্যান করছি। এই বক্তব্য বিএনপির লক্ষ লক্ষ কর্মী-সমর্থকের অনুভূতির প্রতি অসম্মান।”

নুসরাত উল্লেখ করেন, “আমরা ব্যক্তি নয়, কিন্তু বক্তব্যের অপসংস্কৃতি ও আদর্শচ্যুতি প্রতিরোধে সচেতন। আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে, আন্দোলনের ছাত্রশক্তি হিসেবে মাঠে ছিলাম, আছি এবং থাকব।”

এর আগে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসীন মন্টুর শোকসভায় ফজলুর রহমান বলেন, “এই দেশে এখন সবাই অনিরাপদ, এই যে মব রাজনীতি চলছে, মব কালচার চলছে।” তিনি আরও বলেন, “হাসিনা আর বঙ্গবন্ধু এক জিনিস না। হাসিনা খারাপ করছে এর জন্য বঙ্গবন্ধু খারাপ না। আমি আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলছি, হ্যাঁ ফ্যাসিস্ট। কিন্তু ফ্যাসিস্টের একটা নেতৃত্ব ছিল। প্রত্যেক জায়গাতে, সারা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা থানায় ফ্যাসিস্ট হইলেও একজন নেতা ছিল। মানুষ বিপদে পড়লে ওই লোকটার কাছে যাইতে পারতো। প্রত্যেক এলাকায় একজন এমপি ছিল। ইলেলেক্টেড অর নন ইলেক্টেড। সেইখানে গিয়ে মানুষ কথা বলতে পারতো। সব জায়গাতে একটা নেতৃত্ব ছিল। সমস্ত জায়গাতে প্রশাসনিক দক্ষতা ছিল।”

উল্লেখ্য, নুসরাত জাহান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কিশোরগঞ্জের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হন। নুসরাতের বাড়ি করিমগঞ্জ উপজেলার গুজাদিয়া এলাকায়। তার পরিবার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।