
পরশুরাম ও ফুলগাজীতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পরশুরাম ও ফুলগাজীতে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এই পানি ছাগলনাইয়া ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করায় নতুন করে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর অন্তত ২১টি স্থানে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ফেনী-ফুলগাজী ও ফেনী-ছাগলনাইয়া আঞ্চলিক সড়কের ওপর দিয়ে ২ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত পানির প্রবাহ ছিল। তবে ফেনী শহরের প্রধান সড়কের জলাবদ্ধতা কমে যাওয়ায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
সকালে ফেনী-ছাগলনাইয়া সড়কের রেজুমিয়া থেকে পৌরসভা পর্যন্ত অংশে এক থেকে দুই ফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। এতে ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠাননগর, রাধানগর ও ছাগলনাইয়া পৌরসভার অন্তত ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ফেনী সদর উপজেলার কাজিরবাগ, মোটবী, ছনুয়া ও ফাজিলপুর ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
মোটবী ইউনিয়নের তরুণ উদ্যোক্তা ফখরুল ইসলাম জানান, ইজ্জতপুর গ্রামে রাত থেকে পানি বাড়ছে এবং বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত সড়কের কোথাও কোথাও ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত পানি জমে গেছে। এলাকার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে এবং অনেকে গরু-ছাগল নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
ফেনীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান জানান, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৮ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত কমতে থাকায় শুক্রবার থেকে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে।
ফেনী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা নাসরিন কান্তা জানান, খালগুলো পরিষ্কার রাখা হয়েছে এবং ইউনিয়নগুলোর প্রশাসকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা নাগরিকদের সচেতন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন মজুমদার জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১ দশমিক ৯৩ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফুলগাজী এলাকার বন্যাকবলিত গ্রামগুলোতে পানির স্তর অপরিবর্তিত রয়েছে। পানির চাপ কমে যাওয়ায় নতুন করে বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা নেই। পানি কমলেই ভাঙনকবলিত স্থানগুলো মেরামত করা হবে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর