
ভোলার মনপুরা উপজেলায় টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উপজেলার শত শত মাছের ঘের, পুকুর ও কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে উপজেলার প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্য চাষি ও প্রান্তিক কৃষকেরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলেও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ বা সহযোগিতা পৌঁছায়নি।
উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ, দাসেরহাট, উত্তর সাকুচিয়া, রহমানপুর ও জংলারখাল এলাকায় বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
মনপুরা উপজেলা কৃষি ও মৎস্য বিভাগ জানায়, টানা বর্ষণে মৎস্য খাতে প্রায় ১ কোটি টাকা এবং কৃষি খাতে অর্ধ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে উপজেলায় মোট ক্ষতির পরিমাণ ১.৫ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আহসান তাওহিদ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে মাঠকর্মীরা যাচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে মোঃ মাইনুদ্দিন জানান, এ বছর ১১টি ঘেরে মাছ চাষ শুরু করেছিলেন, কিন্তু সব ঘের ডুবে যাওয়ায় তার প্রায় ৮৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আরেক ব্যবসায়ী মোঃ রাজীব জানান, কিস্তির টাকা নিয়ে মাছ চাষ করে এখন তিনি প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন।
মনপুরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আলী আহমেদ জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে সহযোগিতা করা হবে।
স্থানীয়দের দাবি, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত মানুষগুলোর এখন একমাত্র প্রয়োজন সরকারি সহযোগিতা, বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে না পারা অনেকেই বাড়িতেই চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, দ্রুত ত্রাণ, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর