
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় সড়কের পাশ থেকে ইমতিয়াজ (২২) নামের এক তরুণের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গত ১২ জুলাই তিতাসের জিয়ারকান্দি গুলবাগ এলাকায় হোমনা-গৌরীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে ওই তরুণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর পরদিন পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়। এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি জানায় পিবিআই।
পিবিআই জানায়, বরিশালের এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিনের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল নিহত তরুণ ইমতিয়াজের। একপর্যায়ে ইমতিয়াজ ওই নারীর মেয়ের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ বিষয় জানতে পেরে ইমতিয়াজকে কৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে এনে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় সহযোগী হিসেবে ছিলেন ওই ব্যক্তির ছেলে ও মামা।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম বলেন, ‘‘ইতোমধ্যে ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।”
নিহত ইমতিয়াজ বরিশালের কাজীরহাট থানার রতনপুর (চিলমারি) গ্রামের মো. দুলাল হাওলাদারের ছেলে। ঘটনার পরদিন তিতাস থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন তার বাবা।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানী ঢাকার কামরাঙ্গীরচর ও শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ব্যক্তি, তার ছেলে ও শ্যালককে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারওয়ার আলম বলেন, ‘‘হত্যাকাণ্ডের পর মামলা হলে ছায়াতদন্ত শুরু করে পিবিআই। তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মেরুন রঙের একটি পুরোনো নোয়া গাড়ি এবং গাড়ির ভেতরে চালকের আসনের পাশের ড্রয়ার থেকে ইমতিয়াজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে বুধবার আসামিরা কুমিল্লার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।”
আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাতে পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘‘প্রধান আসামি পেশায় একজন চালক। তিনি ঢাকায় গাড়ি চালাতেন। তার পরিবার বরিশালে থাকেন। নিহত ইমতিয়াজ কয়েক বছর আগে ওই ব্যক্তির স্ত্রী এবং পরে মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। তখন থেকেই তিনি তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে গত ১০ জুলাই ইমতিয়াজকে কৌশলে ঢাকায় ডেকে এনে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কুমিল্লার তিতাসে নিয়ে তাকে হত্যা করেন।
তবে ইমতিয়াজের বাবা দাবি করেন, তার ছেলের সঙ্গে ওই ব্যক্তির স্ত্রীর কোনো অবৈধ সম্পর্ক ছিল না। তবে ওই ব্যক্তির মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিনি ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চান।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর