নিবন্ধন আবেদনে তথ্যের ঘাটতি পূরণের জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) দ্বিতীয় ধাপে আরও ৮২টি দলকে ১৫ দিন সময় দিয়ে চিঠি দেওয়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

রবিবার (২০ জুলাই) ইসির উপসচিব মো. মাহবুব আলম শাহ্ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, "আমরা প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি পাঠিয়েছি এবং এখন দ্বিতীয় ধাপে ৮২টি দলকে চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে সবাইকে আমরা ১৫ দিন সময় দিয়েছি।"

ইসি সূত্র জানায়, গত ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন। দুই দফা সময় বাড়ানোর পর সময়সীমা শেষ হয় গত ২২ জুন। এই সময়ের মধ্যে ১৪৪টি দল নিবন্ধনের আবেদন জমা দেয়। দলগুলোর আবেদন যাচাই করে কমিশন জানতে পারে, ১৪৪টি দলের মধ্যে একটিও নিবন্ধনের পূর্ণ শর্ত পূরণ করতে পারেনি। প্রথম দফায় গত বৃহস্পতিবার ৬২টি দলকে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে চিঠি পাঠানো হয়। দ্বিতীয় দফায় আজ অবশিষ্ট ৮২টি দলকে চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে। আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে দলগুলোকে তথ্য প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলের একটি কেন্দ্রীয় কমিটি, এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি থাকতে হয়। সেইসঙ্গে প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ থাকতে হয়। এছাড়াও কোনো দলের কেউ পূর্বে সংসদ সদস্য থাকলে বা পূর্বের নির্বাচনে পাঁচ শতাংশ ভোট পেলেও নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ধরা হয়। এই প্রধান শর্তগুলো ছাড়াও বেশকিছু নিয়মকানুন মেনে আবেদন করতে হয়। প্রাথমিক বাছাইয়ে সাধারণত এসব নিয়মকানুন খতিয়ে দেখা হয়।

নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দলগুলোর আবেদন পাওয়ার পর কমিশন প্রথমে প্রাথমিক বাছাই করে। এরপর সেই দলগুলোর তথ্যাবলী সরেজমিনে তদন্তের পর বাছাই সম্পন্ন করা হয়। এরপর দাবি আপত্তি চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় কমিশন। সেখানে কোনো আপত্তি এলে শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করা হয়। আর কোনো আপত্তি না থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে নিবন্ধন সনদ প্রদান করে ইসি। নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল নিজ প্রতীকে ভোটে প্রার্থী দিতে পারে না।

বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১টি (আওয়ামী লীগসহ)। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৫টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। দলগুলো হলো- জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। সম্প্রতি আদালতের আদেশে জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা নিবন্ধন ফিরে পেলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে।