
গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটের মধ্যে আরও ১০ জন ক্ষুধায় মারা গেছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১১১ জন মানুষ অভুক্ত থেকে প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, এই অঞ্চলটি বর্তমানে ‘জনবহুল ক্ষুধার’ মুখোমুখি এবং পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, এ বছর গাজায় অন্তত ২১ জন পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু অপুষ্টি ও ক্ষুধায় মারা গেছে। মার্চ মাস থেকে বেশ কয়েক সপ্তাহ খাদ্য সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু সহায়তা পৌঁছালেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। সংস্থাগুলোর অভিযোগ, সীমান্তে বিপুল পরিমাণ খাদ্য ও ওষুধ আটকে রয়েছে, যা গাজায় ঢুকতে পারছে না।
গাজায় কার্যরত বিভিন্ন সহায়তা সংস্থা জানায়, স্থানীয় লোকজন এখন আর পর্যাপ্ত খাবারের আশায় নেই—তারা কেবল বেঁচে থাকার মতো কিছু খাবার চাচ্ছে। Mercy Corps, Norwegian Refugee Council সহ অন্তত ১১১টি সংস্থা জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি মানুষের তৈরি দুর্ভিক্ষের শামিল।
সহায়তা কর্মীরা জানাচ্ছেন, খাদ্য ও ওষুধ নিয়ে সীমান্ত পার হওয়া এখন অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। যেকোনো সময় হামলার শিকার হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। সম্প্রতি সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে অন্তত ৩৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাজা প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন জানিয়েছেন, “গাজার হাসপাতালগুলো এখন বড় একটি ট্রমা ওয়ার্ডে পরিণত হয়েছে। চিকিৎসকরা নিজেরাও ক্ষুধায় কষ্ট পাচ্ছেন, তবুও তারা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।”
আল জাজিরার গাজা প্রতিনিধি তারেক আবু আজ্জুম বলেছেন, “লোকজন এখন পরিপূর্ণ খাবার চাচ্ছে না, অন্তত কিছু খাবার পেলেই বেঁচে থাকতে পারবে এমন ভাবছে।” আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দাবি, গাজায় মানবিক সহায়তা অবিলম্বে ঢুকতে দিতে হবে এবং খাবার পৌঁছাতে বাধা দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে। জাতিসংঘের মানবিক সাহায্য বিভাগ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, সহায়তার গতি যদি দ্রুত না বাড়ানো হয়, তাহলে আরও মানুষ অনাহারে প্রাণ হারাবে।
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর