
জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলন দমনে গতবছর সরকারিভাবে মারণাস্ত্র ব্যবহারের ‘খোলা নির্দেশ’ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এমন বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে আল-জাজিরার হাতে থাকা একাধিক গোপন ফোনালাপে। জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি) এসব কল রেকর্ড করেছে। যেগুলো ডিজিটাল ফরেনসিক অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে আল-জাজিরা।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে আল-জাজিরা। ৫০ মিনিটের ওই প্রতিবেদনের ৬ মিনিট ৪০ সেকেন্ড থেকে ৭ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের একটি ফোনালাপ প্রকাশ করা হয়।
হাসিনা ও ইনানের ওই ফোনালাপটি হয় ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে। যেখানে শেখ হাসিনা ইনানের কাছে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি জানতে চান। ওই সময় ইনান হলগুলো অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘অধিকাংশই ফাঁকা হইছে। তবে এরপরও ভিতরে পুলিশের কাজ করতে হবে।’
এই ফোনালাপের আগে ২০২৪ সালের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ ও ছাত্রলীগ। আল-জাজিরার দাবি, এ ঘটনার দুই দিন পর শেখ হাসিনা ও ইনানের মধ্যে এই ফোনালাপ হয়।
সেদিনের ওই কথোপকথনে ইনান শেখ হাসিনাকে জানান, তাদের দলের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাই আতঙ্কিত থাকায় তারা দল থেকে পরিষ্কার নির্দেশনা পাচ্ছিল না। তাই সরাসরি শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন তিনি। ফোনালাপে ইনান বলেন, ‘আপনারে বারবার ফোন দিচ্ছি, আপনি কিছু মনে কইরেন না।’ জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘না, আমি কেন মনে করবো। আমি সারারাতই জাগা, কালকেও তো।’
ফোনালাপে ১৫ জুলাই থেকে টানা ২ রাত এমন কাটিয়েছেন বলেও ইনানকে জানান শেখ হাসিনা। এছাড়াও তিনি বলেন, ‘দক্ষিণে-উত্তরে বলে দিয়েছি, যেখানে যা দরকার তাই করতে।’ পরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এই নেতা হাসিনাকে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠেই ছিল, আপনার নির্দেশনা পাইয়াই সবাই নাইমা গেছে।’
ওই সময় আন্দোলনের পেছনে সন্ত্রাসীরা কাজ করছে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তাদের কোনো সুযোগ দিতে চান না বলেও জানান শেখ হাসিনা। পরে বিষয়টিতে জোরালো সম্মতি দেন ইনান।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর