
‘গাজায় খাদ্যসংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জীবন ঝুঁকির মধ্যেও খাবারের খোঁজে মরিয়া হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। একটি ময়দার বস্তা পাওয়া মানে জীবনের ঝুঁকি নেওয়া, তবুও প্যালেস্টাইনিদের কাছে এর কোনও বিকল্প নেই।
শিশুকে কোলে নিয়ে সাহায্য কেন্দ্রে আসা গাজার নারী সুমুদ ওয়াহদান বলেন, “আমি আমার সন্তানদের জন্য জীবন ঝুঁকি নিয়ে এত দূর এসেছি। ওরা এক সপ্তাহ ধরে কিছু খায়নি।”
তিনি বলেন, “খাবারের অভাবে আমি জায়গা থেকে জায়গায় ঘুরছি। অন্তত একটা রুটি পেলেও আমার সন্তানের মুখে দিতে পারতাম।”
গাজা শহরের আরেক গৃহহীন নারী তাহানি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমি ময়দা আনতে এসেছি, আমার সন্তানদের খাওয়ানোর জন্য খাবার খুঁজছি। আমার একটি সন্তান ক্যানসারে আক্রান্ত। ।”
খাদ্য সংকট, ওষুধের অভাব এবং নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে গাজার হাজারো পরিবার। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো খাদ্য সরবরাহে হিমশিম খেলেও, মানবিক পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই। আর এর চরম মূল্য দিচ্ছে গাজার নিরপরাধ শিশুরা ও সাধারণ মানুষ।
গাজায় খাদ্যসংকট দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ময়দার একটি বস্তা কিংবা একটুকরো রুটি পেতে জীবন ঝুঁকিতে পড়ছেন হাজারো প্যালেস্টাইনবাসী। খাদ্যের জন্য মরিয়া মানুষের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো গাজা।
সন্তানকে কোলে নিয়ে গাজার একটি ত্রাণকেন্দ্রে আসা সুমুদ ওয়াহদান বলেন, “আমি আমার সন্তানদের জন্য জীবন ঝুঁকি নিয়ে এত দূর এসেছি। তারা এক সপ্তাহ ধরে কিছু খায়নি। জায়গা থেকে জায়গায় ঘুরে খাবারের খোঁজ করছি। অন্তত একটি রুটির খোঁজে বেরিয়েছি।”
গাজার আরেক গৃহহীন নারী তাহানি বলেন, “আমি ময়দা আনতে এসেছি, সন্তানদের খাওয়ানোর জন্য খাবার খুঁজছি। আমার একটি সন্তান ক্যানসারে আক্রান্ত। আমি চাই, আল্লাহর বান্দারা জেগে উঠুক—দেখুক এই মানুষগুলোকে। ওরা ধুঁকে ধুঁকে মরছে।”
খাদ্য সংকটে শিশু মৃত্যু, আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান সংঘাত ও অবরোধের কারণে এখন পর্যন্ত ১২৭ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে ক্ষুধা ও অপুষ্টির কারণে, যাদের মধ্যে ৮৫ জনই শিশু।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং শিশু তহবিল সংস্থা ইউনিসেফ বলছে, গাজায় প্রতি ঘণ্টায় পুষ্টিহীনতার কারণে অন্তত ৩ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।
জনপ্রিয় ত্রাণ সংস্থা ‘মেডসঁ সঁ ফ্রঁতিয়ে’ (MSF) জানিয়েছে, শুধুমাত্র গত দুই সপ্তাহে গাজা শহরের শিশুদের মধ্যে চরম অপুষ্টির হার তিনগুণ বেড়েছে। তারা জানায়, “চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় অধিকাংশ শিশুর জীবন সংকটে পড়েছে। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে গণ–দুর্ভিক্ষ অনিবার্য।”
আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা অপ্রতুল, সংকটে কোটি মানুষ
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ইসরাইল সম্প্রতি গাজায় আকাশপথে সীমিত পরিসরে সাহায্য সরবরাহ শুরু করেছে। মাত্র কয়েকটি প্যালেট ত্রাণসামগ্রী (ময়দা, শুকনা খাবার) বিমান থেকে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি, সহায়তা কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রতি ঘণ্টায় সীমিত ‘মানবিক বিরতি’ ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এই সহায়তা দুই মিলিয়নের বেশি মানুষের চাহিদার সামান্য অংশও পূরণ করতে পারছে না। ১০৯টি আন্তর্জাতিক এনজিও এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, “গাজা এখন মৃত্যুপুরী। অবিলম্বে অবরোধ তুলে দিয়ে পূর্ণ সহায়তা প্রবেশের ব্যবস্থা না করলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।”
খাদ্যের লড়াইয়ে মৃত্যু, মানবিক সহানুভূতির আহ্বান
ত্রাণ সংগ্রহের সময় গুলিতে মৃত্যুর ঘটনাও বাড়ছে। খাদ্য বিতরণকেন্দ্রের সামনে গত এক মাসে প্রায় ১,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার মানবাধিকার সংগঠনগুলো। নিরাপত্তা সংকটের কারণে গাজাবাসীরা রাস্তায় নামতে পারছেন না, খাদ্য ও ওষুধের জন্য জীবন হারাচ্ছেন।
এই মানবিক বিপর্যয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি জরুরি সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, “গাজায় এখন যেটা ঘটছে তা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। বিশ্বকে জেগে উঠতে হবে।”
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর