
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ভারতের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “পুশইন করলে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদেরকেই করুন।” রবিবার (২৭ জুলাই) বিকেলে শেরপুর শহরের থানামোড়ে এনসিপির “জুলাই পদযাত্রা” শেষে আয়োজিত জনসমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। তার বক্তব্যে বিদেশি হস্তক্ষেপ ও সরকারের প্রতি গভীর ক্ষোভ প্রতিফলিত হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “ভারত সরকার যদি পুশইন করতেই চায়, তাহলে শেখ হাসিনাকে পুশইন করুন। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের পুশইন করুন। এদেশের মানুষের ঘাড়ে এদের চাপিয়ে দিয়ে আর কতকাল চলবে?” তিনি আরও বলেন, “এই সরকার প্রশাসনের ভেতরেও আওয়ামী দোসরদের দিয়ে ন্যায়ের বদলে অন্যায়কে প্রশ্রয় দিচ্ছে। যারা এসবের সঙ্গে যুক্ত তাদেরও একদিন বিচার হবে।”
সমাবেশে দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই যেখানে প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে। কর্পোরেট লুটেরা আর দলীয় ক্যাডারদের হাতে দেশ জিম্মি হবে না। আজকের এই পদযাত্রা হলো ক্ষমতার অপব্যবহার আর গুম-খুনের রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সূচনা।”
সমাবেশে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “আগামীর বাংলাদেশে কোনো নেতাকে অন্ধভাবে অনুসরণ করা হবে না। তিনি যদি ৯৫টা ভালো কাজ করেন, কিন্তু ৫টা ভুল করেন, তবে তাকে আমরা প্রশ্ন করব, সমালোচনা করব।” তিনি আরও বলেন, “গত এক বছরে আমাদের যে প্রত্যাশা ছিল, তা একরকম মুখ থুবড়ে পড়েছে। সে কারণেই আমাদের এই পদযাত্রা। এটা কেবল পদযাত্রা নয়, এটা হচ্ছে একটি নতুন রাজনৈতিক জাগরণ।”
সমাবেশে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন বলেন, “মাইলস্টোন ঘটনার পিছনে কারা আছে, সেটি জাতিকে জানাতে হবে। এই ঘটনার সঙ্গে কর্পোরেট মাফিয়া বা বাহিনী জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।”
জুলাই পদযাত্রাটি বিকেলে কলেজ মোড়ের শহীদ মাহবুব চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানামোড়ে এসে শেষ হয়।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, এনসিপির সদস্য সচিব আকতার হোসেন, প্রধান সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা ও নাহিদা সারওয়ার নিয়ভা।
দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় অবস্থান ব্যাখ্যা করেন এবং ভবিষ্যতের আন্দোলন ও সাংগঠনিক রূপরেখা নিয়ে কর্মীদের স্পষ্ট বার্তা দেন।
সমাবেশকে ঘিরে শেরপুর জেলা ও পৌর এনসিপি নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর