
সমন্বয়ক পরিচয়ে রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় ঢুকে অর্ধকোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে করা মামলায় অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছে হঠাৎই বিলাসী জীবনযাপন শুরু করা জানে আলম অপু ওরফে গৌরব জামান অপু।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকাদের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন অপু। চাঁদাবাজির অভিযোগে ইতোমধ্যে তাকে বহিষ্কৃত করা হয়েছে। তবে, পদে থাকা অবস্থায় সমন্বয়ক পরিচয়ে আদায় করা চাঁদার টাকায় আয়েশি জীবন ছিল তার। কিনেছেন ইয়াহামা এফজেড-এক্স ব্র্যান্ডের দামি মোটরসাইকেল। থাকতেন ফ্ল্যাট বাসায়। যদিও চাঁদার টাকা কেনা সেই মোটরসাইকেল রাখতে পারেননি তিনি।
শুক্রবার রাজধানীর গোপীবাগ থেকে অপুকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরে তাকে নিয়েই অভিযানে নামে গুলশান থানা পুলিশ। অপুর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোহাম্মদপুরের নবীনগরে তার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজির টাকায় কেনা মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, উদ্ধার করা মোটরসাইকেলটি ১৫০ সিসি ক্ষমতাসম্পন্ন ইয়ামাহা এফজেড-এক্স ব্র্যান্ডের। যেটির বর্তমান বাজারমূল্য ৩ লাখ ৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া অভিযানে চাঁদাবাজি সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়।
এদিকে, গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় হওয়া মামলার অপুসহ এজাহারের নামধারী ছয় আসামিকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গত ১৭ জুলাই সকালে জানে আলম অপু ও মো. আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদ সাবেক এমপি শাম্মী আহম্মেদের গুলশানের বাসায় গিয়ে তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তারা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে চাঁদা না পেলে আবু জাফরকে দোসর আখ্যা দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে ১০ লাখ টাকা নিয়ে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে আসে রিয়াদ ও অপু।
চাঁদার টাকা ভাগাভাগির পর পরে সেদিনই নিজের ভাগের টাকা দিয়ে ইয়ামাহা এফজেড-এক্স ব্রান্ডের ওই মোটরসাইকেলটি কেনে অপু। এর একদিন পর ফের ওই বাসায় গিয়ে দাবি করা চাঁদার বাকি টাকার জন্য আবার হুমকি দেয়। সেদিন টাকা না পেয়ে তারা চলে আসে। কিন্তু তৃতীয়বারের মতো তারা গত ২৬ জুলাই আবার ওই বাসায় যায়। সেদিন তারা ১৫ থেকে ২০ জন যুবককে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ‘বাকি রাখা’ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে শাম্মী আহম্মেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে জানালে সেখানে গুলশান থানা পুলিশ অভিযান চালায়। সেদিন ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার হয় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক সুলাইমান বিন রিয়াদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন। তবে, সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় অপু। যদিও শেষরক্ষা হয়নি তার।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর