
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাকসা বাইদ গ্রামের কাঁচা রাস্তাটির বেহাল দশার কারনে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকার হাজারও মানুষ। বর্তমান বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এই রাস্তা দিয়ে গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না জরুরি সেবার কোন গাড়ি।
সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে যায়। ফলে এলাকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদরাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় শতশত শিক্ষার্থীর। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ওই গ্রামের বাসিন্দাসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।
রাস্তার এই বেহাল দশার কারনে যাতায়াতকারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে চলাচল করতে না পারায় এলাকাবাসী অভিনব পন্থায় রাস্তার মাঝে ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বর্তমানে মৌসুম হওয়ায় এই রাস্তায় মাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে যেন কাঁদার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বিগত পাকিস্তান সরকারের আমলে তৎকালীন চেয়ারম্যান স্থানীয়দের জন্য চলাচলের জন্য এই কাঁচা সড়কটি নির্মাণ করেন। নব্বই দশকে একবার কাবিখা প্রকল্পের অধীনে মেরামত করা হয়েছিল। এত বছর পরও আর সংস্কার করা হয়নি এই রাস্তাটি। জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচিত হওয়ার পর আর তাদের দেখা মেলে না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই এলাকায় প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষের বসবাস করে। সবাই মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, প্রশাসন ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ হয়নি। তাই ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। বাকসা বাইদ গ্রামের এই সড়ক দিয়ে আবুয়ার পাড়া হয়ে শিমুলচড়া, চাংপাড়া, চরশিমুলচড়া ও কান্দরপাড়াসহ অন্তত ৫/৬ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা চাঁন মিয়া সরকার বলেন, বহু বছর আগে এই কাঁচা রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু এলাকায় হাঁটু পর্যন্ত কাঁদা হয়ে যায়। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। অতি প্রাচীন রাস্তাটি পাকাকরণ এখন সময়ের দাবি।
অপরজন বাকসা বাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমান উল্লাহ বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। তাই রাস্তাটি জরুরিভিত্তিতে পাকা করা দরকার।
ওই এলাকার বাসিন্দা উত্তর শিমুলচড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিল্পী বেগম বলেন, এই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই রাস্তা দিয়ে ৪/৫ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। বৃষ্টির দিনে রাস্তাটি ব্যবহারের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
৬ নং সদর ইউনিয়নের মেম্বার মোকছেদ আলী বলেন, এই সড়কটির পরিচিতি নম্বর ছিল না। আমি সাধ্যমত চেষ্টা করছিলাম। পরবতীতে সরকার পতন হয়। আর কাজ এগিয়ে নিতে পারি নাই। সড়কের অবস্থা এখন খুবই নাজুক।
বিষয়টি জানতে চেয়ে শ্রীবরদী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফরিদুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, এই সড়কের এমন অবস্থা আমার জানা ছিল না। সদর ইউনিয়নের এমন রাস্তা থাকার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করে ওই রাস্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন তিনি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর