
কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর মোহনায় সরকারি অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে পাথর ব্যবসা ও বালু উত্তোলনের অভিযোগে অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। দীর্ঘদিন ধরে নদীর চর দখল করে অবৈধভাবে বালু ও পাথরের ব্যবসা করে আসছিল ‘তাসনিয়া এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি সরকারি কোনো অনুমতি না নিয়ে নদীর একটি অংশ ভরাট করে ব্যবসা পরিচালনা করছিল।
সোমবার গণমাধ্যমে বিষয়টি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন তৎপর হয়। মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন সুলতানার নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের খবর আগে থেকে পেয়ে বালু উত্তোলনকারীরা পালিয়ে যায়। পাথরের ব্যবসায় জড়িতরা তাঁদের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে দুপুর পর্যন্ত দেখা করার কথা থাকলেও বিকেল গড়িয়ে গেলেও তাঁরা উপস্থিত হননি এবং তাঁদের কলেও পাওয়া যায়নি বলে জানান সহকারী কমিশনার।
শারমিন সুলতানা জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাথর ব্যবসার খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। বালু উত্তোলনকারী কাউকে পাওয়া যায়নি। জব্দকৃত ১০ হাজার ঘনফুট বালু নিলামে তোলা হয়েছে। প্রতি ঘনফুটের জন্য দুই টাকা হারে মোট ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। বালু রাখার জায়গাটি লাল পতাকা দিয়ে ঘেরাও করা হয়েছে। তাসনিয়া এন্টারপ্রাইজকে সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তবে তাঁরা আজকের মধ্যে না এলে সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করা হবে এবং যদি সরকারি জায়গা পাওয়া যায়, তাহলে তা ছেড়ে দিতে হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, তাসনিয়া এন্টারপ্রাইজকে এর আগেও জরিমানা করা হয়েছে এবং তাঁদের কাগজপত্র জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেসব কাগজপত্র তাঁরা জমা দিয়েছেন, তাতে কোনো সরকারি অনুমতির ছাপ পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম বলেন, নদীর জায়গা দখল করে পাথরের ব্যবসা পরিচালনার সংবাদ চোখে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ব্যবসাটি বন্ধ করে দিয়েছে। তাঁদের ব্যবসায় প্রশাসন বাধা দেয়নি। তবে সরকারি জায়গা হলে ছেড়ে দিতে হবে, না হলে উচ্ছেদ অভিযান করা হবে। সকল কাগজপত্র নিয়ে দেখা করার জন্য বলা হলেও মঙ্গলবার পর্যন্ত কেউ হাজির হননি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাঁকখালী নদীর কোল ঘেঁষে অন্তত পাঁচ শতাধিক বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। নদীর প্রায় কয়েকশ একর প্যারাবন ধ্বংস হয়েছে। পেশকার পাড়া, মাঝিরঘাট, পশ্চিম-উত্তর দিক, ছয় নম্বর জেটিঘাট, ফিশারীঘাট, নুনিয়াছটা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার নদীর তীর দখল করে আরও কয়েক শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর