
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে এসেছে বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় রাজধনেশ পাখি। পার্বত্য জেলা বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম রেমাক্রি এলাকা থেকে উদ্ধার করা এই দুই রাজধনেশ এখন দর্শনার্থীদের জন্য বড় আকর্ষণ হয়ে উঠেছে।
বান্দরবান বনবিভাগ জানায়, থানচির রেমাক্রি ইউনিয়নের এক পাহাড়ি বাসিন্দা তার বাড়িতে বিক্রির উদ্দেশ্যে বিরল প্রজাতির রাজধনেশ পাখি দুটি আটকে রেখেছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৬ আগস্ট বনকর্মীরা অভিযান চালিয়ে পাখিগুলো উদ্ধার করেন। এরপর সেগুলো বান্দরবান সদর বন বিভাগের কার্যালয়ে আনা হয় এবং পরবর্তীতে বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনজুর আলম।
তিনি জানান, পার্কে আনার পর পাখিগুলোকে প্রথমে ভেটেরিনারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তারা সুস্থ প্রমাণিত হলে পাখিশালায় রাখা হয় এবং নিয়মিত ফলমূল সরবরাহ করা হচ্ছে।
রাজধনেশ পাখির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এর শিং-এর মতো বাঁকানো শক্ত ঠোঁট, যার সাহায্যে এটি উঁচু গাছের ডালে খোড়ল তৈরি করে বাসা বানায়। এরা মূলত ফল, পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকে। পৃথিবীতে মোট ৫৬ প্রজাতির রাজধনেশ রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশে পাওয়া যায় চার প্রজাতি। তবে বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণে এরা এখন বিলুপ্তির পথে।
চট্টগ্রামের গভীর বনাঞ্চল রাজধনেশের প্রধান আবাসস্থল হলেও দেশের অন্যত্রও এর দেখা মেলে। কয়েক বছর আগে পঞ্চগড়ে এর উপস্থিতি রেকর্ড হয়েছিল। সর্বশেষ থানচির দুর্গম বন থেকে এই দুটি পাখি উদ্ধার করা হয়।
মো. মনজুর আলম বলেন, এখনকার দিনে রাজধনেশ খুব বিরল হয়ে গেছে। তাই দর্শনার্থীরা এগুলো দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। পাখিগুলোর নিরাপত্তার জন্য পার্কের কর্মচারীরা সবসময় নজরদারি করছেন, যাতে কেউ ঢিল ছুঁড়ে বা বিরক্ত না করতে পারে।
ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের এই নতুন অতিথিরা ইতিমধ্যেই দর্শনার্থীদের কাছে এক বিশেষ আকর্ষণে পরিণত হয়েছে।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর