
চুয়াডাঙ্গায় শুরু হয়েছে চলতি মৌসুমের পাট কাটা। এবার কৃষকরা মাঠে মাঠে পাট কাটার কর্মযজ্ঞ শুরু করলেও, পাটের দাম ভালো থাকা সত্ত্বেও কৃষকদের কপালে দুশ্চিন্তার ছাপ পড়েছে। অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে পাটের ফলন কম হয়েছে, ফলে কাঙ্ক্ষিত ফলনে রয়েছে ঘাটতি। তবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, কৃষকরা পাটের ভালো দামে ফলনের লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবে। চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, এবার চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৮ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে এবার। পাট কাটার আগ মুহূর্তে অতিবৃষ্টিপাতের কারণে পাট হেলে পড়ে। ফলে পাটের কাঙ্ক্ষিত ফলন হবে না এমনটা আশঙ্কা করেছেন কৃষকরা। এক বিঘা পাট উৎপাদনে খরচের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। বিঘায় ৮ থেকে ১২ মণ পাট হয়। এবার গত বছরের তুলনায় পাটের দামে ৫০০ টাকা বাড়তি হয়েছে বাজারদর। এক মণ পাটের দাম বাজারে ৪ হাজার টাকা। আবার পাটকাঠির দামও বেশি। তাই পাটের দামে কৃষক হাসবে এমনটা দাবি জেলা কৃষি বিভাগের। কিন্তু কৃষকদের মুখে হাসি নেই। প্রতিবারের ন্যায় এবারও কপালে আকাশ ভরা দুশ্চিন্তার বর্ণ নিয়ে পাট কাটছে কৃষক।
কৃষি বিভাগ দাবি করে জানায়, পাটের দামও ভালো। আবার ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। এবার পাট জাগ দেওয়ার কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। এবার খালবিল পুকুর ভরে পানি রয়েছে। ফলে কৃষকরা পাটের দামে খুশি হবে। আর পাট চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে। একই সাথে মাঠ দিবসে পাটের আবাদ বাড়ানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলা বেলগাছি গ্রামের পাট চাষী হাসমত আলী বলেন, "এবার পাট কাটছি। পাটে ভালো ফলন হয়নি। পাটের বাজার চড়া। ফলে এবার পাট কাটা নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তা। আবার কৃষি উপকরণের দামও বেশি। এই মুহূর্তে পাটের ফলনটা খুব দরকার ছিল।"
আরেক কৃষক আসাদুল হক বলেন, "এক বিঘায় পাটের খরচ হয় সবকিছু দিয়ে প্রায় ২ হাজার টাকা। অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে পাটের ফলন কম হয়েছে এবার। তাই পাটের ভালো ফলন পাচ্ছি না। এতে কৃষকরা লোকসানে পড়ে যাচ্ছে। তাই পাটের দাম বাড়লেও দুশ্চিন্তা রয়ে যাচ্ছে।"
এবিষয়ে কথা হলে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, এবার গত বছরের তুলনায় পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। প্রায় ৫০ শতাংশ পাট কাটা হয়ে গেছে। পাট পচানোর জন্য যে পরিমাণ পানি প্রয়োজন তা পর্যাপ্ত রয়েছে। এবার পাটের দাম বেশি। ফলে পাটের যে উৎপাদন ফলন তা পুষিয়ে যাবে। দাম ভালো তাই কৃষক এবারও হাসবে। তাছাড়া পাট চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর