
বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের জাকিরতবক গ্রামে আবুল কালাম (৬০) ও তাঁর স্ত্রী শেফালী বেগম (৫০) মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আবুল কালাম একসময় দিনমজুর ছিলেন। হঠাৎ স্ট্রোকের পর তাঁর ডান হাত ও পা অবশ হয়ে যায়, বাকশক্তিও হারান। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় তাঁদের রোজগার, খাবারও জুটছে না ঠিকমতো।
স্বামী অসুস্থ, স্ত্রীও প্যারালাইজড। লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটলেও অসুস্থ স্বামীর দেখাশোনার দায় সামলাতে গিয়ে তাঁর নিজের জীবন ভেঙে পড়েছে। তাঁদের চার ছেলে খোঁজ নেয় না, মেয়েরা বিবাহিত হয়ে চলে গেছে। খেয়ে-না-খেয়ে দিন কাটছে এই দম্পতির।
তাঁদের মাথার ওপরে যে ঘর, তা আসলে একটি ঝুপড়ি। চারপাশ ছেঁড়া টিন আর ওপরে পলিথিন দিয়ে ঢাকা। ভেতরে নেই কোনো বিছানা বা আসবাবপত্র। কেবল একটি ছোট চৌকি আর মাটিতে বিছানা দিয়ে রাত কাটাতে হয়। বৃষ্টির দিনে পানি ঢুকে গেলে ভেজা মাটির ওপর বসে রাত কাটান তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দা হামেদ মোল্লা বলেন, "কালাম একসময় দিনমজুর ছিলেন। স্ট্রোক করার পর আর কাজ করতে পারেন না। রোজগার বন্ধ, খাবারও ঠিকমতো জোটে না। খুব কষ্টে দিন কাটছে। আমি নিজে দিনমজুর। আমার সম্বল থাকলে আমি তাদের জন্য একটি ঘর তৈরি করে দিতাম।"
প্রতিবেশী আবুল লস্করও জানান, "আমি প্রায়ই তাদের দেখতে যাই। দুঃখজনক হলেও সত্য, তারা সাহায্যের জন্য কাউকে পায় না। স্থানীয় প্রশাসন যদি নজর দেয়, অবস্থা বদলে যেতে পারে।"
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন নিঃশব্দে বসে আছে, যেন তাদের কোনো দায়িত্ব নেই। কোনো ত্রাণ, ভাতা বা সহায়তা এই পরিবারের কাছে পৌঁছায়নি। এই দায়িত্বহীনতার কারণে প্রতিদিন যে মৃত্যুর প্রহর গুনছে এই দম্পতি, তা শুধু তাদের নয় সমাজের প্রতিটি মানুষের বিবেককেও কলঙ্কিত করছে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর