• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪৬ মিনিট পূর্বে
নাসিরউদ্দিন টিটু
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৫ আগস্ট, ২০২৫, ০৯:১৯ রাত

ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ স্বজনদের ভাঙচুর

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বিয়ের মাত্র ১১ মাসের মাথায়, ১৯ বছর বয়সে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে খাদিজা আক্তার তানিয়া নামের ওই প্রসূতি মারা গেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালে।

শুক্রবার খাদিজার সিজার করে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করানো হয়। এরপর রোগীকে দুই ঘণ্টা পর অপারেশন টেবিল থেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢামেকে তার আরেক দফা অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর শনিবার বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা মৃত্যুবরণ করেন।

খাদিজার দেবর হাসান জানান, ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসার কারণে তার ভাবীর অকাল মৃত্যু হয়েছে। এটি ছিল তাদের প্রথম সন্তান। ভাবীর অকাল প্রয়াণে ভাই শয্যাশায়ী।

খাদিজার স্বজনরা জানান, রোগীর ক্ষতি যা হওয়ার, ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালে সিজারের সময় সেটা হয়েছে। রোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার ডাক্তাররা জানিয়েছেন, সিজার করার সময় রোগীর রক্তনালি বেশি পরিমাণে কেটে ফেলা হয়েছে। এই অবস্থায় রোগীকে সেলাই না দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকে। পরে ঢামেক কর্তৃপক্ষ রোগীকে বাঁচাতে আরেক দফা অস্ত্রোপচার করলেও খাদিজাকে বাঁচানো যায়নি।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বজনরা শনিবার রাতে ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভ ও সামান্য ভাঙচুর করে। অভিযোগ উঠেছে, এই হাসপাতালে খাদিজার মতো অনেকেই ভুল চিকিৎসার কারণে প্রাণ হারিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা জাকিয়া আক্তার বলেন, গত বছর এদের ভুল চিকিৎসার কারণে আমার বান্ধবীর মেয়ে মারা গেছে। আড়াকুলের এলাকার গৃহিণী আখি খান বলেন, ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ভালো না। ভুলভাল রিপোর্ট দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। ভুক্তভোগী সাব্বির হোসেন বলেন, রোগী নিয়ে এরা ব্যবসা করে। স্টাফদের ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। এখানে অনভিজ্ঞ ডাক্তারদের চেম্বার বেশি। যন্ত্রপাতি পুরনো, ভালো রিডিং (সঠিক রেজাল্ট) আসে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালে রায়হান মিয়া নামে এক ব্যক্তি ইকুরিয়া এলাকায় এই ক্লিনিকটি গড়ে তোলেন। তিনি এক সময় সাজেদা হাসপাতালে চাকরি করলেও হঠাৎ সেই চাকরি ছেড়ে নিজেই ক্লিনিক খুলে বসেন। বিগত সরকারের সময় আওয়ামী লীগের তোষামোদী করে কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদকে ‘তেল’ দিয়ে উপজেলা বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতাল কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতালের সাবেক এক কর্মচারী জানান, এই হাসপাতালের বেশিরভাগই অদক্ষ জনবল। মালিক রায়হান কম বেতন দিয়ে এদের রেখেছেন। এছাড়াও সে (মালিক) হাসপাতালে সুদের ব্যবসা করেন। রোগীদের বাধ্য করেন 'স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্ড' করতে। নানা প্রলোভন দেখান স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্ড করলে চিকিৎসাসেবায় খরচে ছাড় পাওয়া যাবে। এভাবে শত শত লোকের কাছ থেকে সে আমানত সংগ্রহ করলেও পরে আর ফেরত দেন না। তিনি আরও জানান, এই হাসপাতালে ডা: জসিম উদ্দিন নামে একজন চিকিৎসক বসেন। আসলে সে চিকিৎসক নন। রায়হান মিয়ার লোক। সে ডাক্তার পরিচয়ে রোগী দেখে। এই ডাক্তার রায়হানের কথামতো রোগীদের অতিরিক্ত টেস্ট করিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জামালপুরের দরিদ্র ঘরের সন্তান রায়হান মিয়া সাজেদা হাসপাতালে ২৫/৩০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন। সেখানে থাকা অবস্থায় সে ২০০৭ সালে কেরানীগঞ্জে ৪ শতাংশ জমি কিনে বাড়ি করেন। এরপর ২০১৪ সালে সেই চাকরি ছেড়ে কোটি টাকা দিয়ে গড়ে তোলেন ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতাল। এই হাসপাতাল ও 'স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্ড' এর ব্যবসা করে গত এক দশকে তিনি হাতিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা।

এদিকে গৃহবধূ খাদিজার মৃত্যুর ঘটনাটি আলোচিত হলে রোববার ঢাকা জেলা সিভিল সার্জনের একটি টিম ইকুরিয়া জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আক্তার হোসেন জানান, খাদিজার পরিবার অভিযোগ নিয়ে এসেও ফিরে গেছে। শুনেছি বিষয়টি তারা আপোস মীমাংসা করে ফেলেছে।

খাদিজার সিজারের অস্ত্রোপচার করেছেন ডা: আনিসা ফাহমিদা। অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে গিয়েও তার দেখা মেলেনি।

হাসপাতালের মালিক রায়হান মিয়া বলেন, ওই রোগী কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মারা গেছেন। তার পরিবার তো বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। তাদের কোনো অভিযোগ নেই। আপনারা (সাংবাদিকরা) কেন মাথা ঘামাচ্ছেন? ভুয়া ডাক্তারকে চেম্বার দেওয়া, বেশি বিল নেওয়া, সম্পদ ও শিক্ষাগত যোগ্যতা সহ নানা বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]