
সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের সুদিন ফিরেছে। নড়াইলের তিন উপজেলার বাজারগুলোতে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওযায় জাগ দেওয়ার জন্য পানির অভাবও হয়নি। নড়াইলের সর্ববৃহৎ পাটের পাইকারি মোকাম লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের মিঠাপুর হাট। মিটাপুর হাট সপ্তাহে দুই দিন বরিবার ও বুধবার।
বুধবার মিঠাপুর হাঠে পাট ৩ হাজার ২০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এবার অতিবর্ষণে পাটের ফলন ব্যাহত হলে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়লেও পাটের বাড়তি দামে সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পেরে তাদের মুখে হাসি ফুটেছে।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, এ বছর নড়াইলে মোট ২৩ হাজার ৪৯৮ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। বিপরীতে ৫৮ হাজার ৫৯০ টন পাট উৎপাদানের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরেজমিন আজ বুধবার নড়াইলের মিঠাপুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, নতুন পাটে সয়লাব মিঠাপুর পাইকারি পাটের হাট। সারা বছরে জমানো দায়দেনাসহ জরুরি নানা প্রয়োজনে চাষিরা তাদের উৎপাদিত পাট বেচতে হাটে নিয়ে আসেন। ভোর থেকেই ক্রেতা বিক্রেতার ব্যাপক সমাগমে হাট কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিভিন্ন বাহনে চাষিদের পাট হাটে উঠতে না উঠতেই ফঁড়িয়া ব্যাপারীরা ঘিরে ধরেন বিক্রেতাদের, পাটের মান পরখ করে দাম হাঁকছেন, দরদামে পটলেই দেখতে দেখতে মণকে মণ পাট হাত বদল হয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীর গুদামে। মান ভেদে প্রতি মণ ৩ হাজার ২০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়।
হাটে পাট বেচাকেনা শুধু মিঠাপুর হাটে নয়, বর্তমানে মাইজপাড়া তুলারামপুরসহ জেলার অন্যান্য পাটের পাইকারি মোকামেও।
চাষিরা জানান, ‘বাজারে ভালো মানের পাটের বরাবরই চাহিদা থাকে। অন্যান্য বছর অনাবৃষ্টির কারণে পানি শূন্য থাকে খাল বিল ডোবা। পাট পঁচানো নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হয়। পানির সংকটে বাধ্য হয়ে নোংরা পানিতে পাট পঁচাতে হয়। এতে পাটের আঁশ কালো হয়ে মান হারায়। পক্ষান্তরে এবার ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে নদী-নালা, খাল-বিলে স্বচ্ছ পানি ছিল। পাট পঁচাতে অসুবিধা হয়নি। পাটের রঙও ভালো। মান ভালো হওয়ায় ব্যাপক চাহিদার পাশাপাশি বেড়েছে দামও। এবার অতিবর্ষণে পাটের ফলন ব্যাহত হলে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়ে। তবে পাটের দাম বাজারে বেশি হওয়ায় সে ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে তাদের।’#
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর