
বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে মোংলা বন্দর জুড়ে চলছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা প্রথম দিনের হরতাল ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী চার দিনের কর্মসূচির মধ্যে আজ, সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর), সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নদী পারাপার, ইপিজেড, মোংলা বন্দরসহ সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ ও সড়ক অবরোধসহ এক টানা এই হরতাল চলছে। সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এই কর্মসূচি চলমান থাকবে। আজ প্রথম দিনে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল, আগামীকাল মঙ্গলবার বিক্ষোভ এবং বুধ ও বৃহস্পতিবার এক টানা ৪৮ ঘণ্টা আবারও হরতাল পালনের ঘোষণা দিয়েছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।
সোমবার সকাল ৬টা থেকে হরতাল ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচি চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। মোংলার কুমারখালি, শ্রমিক সংঘ চত্বর, শাপলা চত্বর, খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ফয়লা, মোংলা বাসস্ট্যান্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়কের ওপর গাড়ি, গাছের গুঁড়ি ও বেঞ্চ রেখে অবরোধ করছেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা। হরতালের অংশ হিসেবে উপজেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় নেতাকর্মীরা এবং মিছিল সহকারে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আজ সকাল ৬টা থেকেই মোংলার সকল দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখছেন ব্যবসায়ীরা। বন্ধ রাখা হয়েছে নদী পারাপারের খেয়ার ট্রলারও। এতে নদীর দুই পাড়ে ইপিজেডের গার্মেন্টস কর্মীসহ শত শত মানুষ তাদের কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য জড়ো হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা।
এছাড়া মোংলা বাস স্ট্যান্ড থেকে সকাল থেকে ছেড়ে যায়নি খুলনা-যশোর-বাগেরহাট ও ঢাক-চট্টগ্রামসহ দূরপাল্লার কোনো বাস। শহরেও কোনো গাড়ি বা ভ্যান-রিকশা চলেনি।
ভোর থেকেই হরতাল সফল করার জন্য সড়ক-মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতাকর্মীরা বসে থেকে হরতাল পালনে সহায়তা করছে। শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভাও করেছে তারা। এছাড়া হরতালের অংশ হিসেবে নেতাকর্মীরা সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে রাখে।
নেতাকর্মীরা জানান, দেশ স্বাধীনতার পর থেকেই বাগেরহাট জেলায় ৪টি আসন বহাল ছিল। গত ৩০ জুলাই আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ জেলার চারটি আসনের মধ্যে একটি অংশ কমিয়ে তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই বাগেরহাটবাসী ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন নেতাকর্মীরা। তার বিপরীতে গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন জারি রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। তবে যদি নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে, আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতৃবৃন্দ।
নির্বাচন কমিশনের এই আসন বিন্যাস গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষা করেছে বলে জানান বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতাকর্মীরা।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর