
গাজীপুরের কালীগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে বেদখল হওয়া সরকারি খাসজমি উদ্ধার করে খেলার মাঠ হিসেবে ঘোষণার মাত্র দুই মাসের মাথায় সেটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। সুরক্ষা প্রাচীর না থাকায় স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি প্রতিনিয়ত সেখানে আবর্জনা ফেলে মাঠটির পরিবেশ নষ্ট করছে। ফলে শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার একমাত্র জায়গাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এবং পুনরায় বেদখল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, গত ১৭ জুন তৎকালীন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী এই মূল্যবান খাসজমিটি দখলমুক্ত করে সেটিকে পৌর খেলার মাঠ হিসেবে উদ্বোধন করেন। এই উদ্যোগে স্থানীয় শিশু-কিশোর ও ক্রীড়ামোদীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই আনন্দ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন স্থানে গৃহস্থালি ও দোকানের বর্জ্য, পলিথিন এবং নানা ধরনের আবর্জনার স্তূপ জমে আছে। দুর্গন্ধে মাঠের কাছে যাওয়াও কঠিন। সুরক্ষা প্রাচীর না থাকার সুযোগে রাতের আঁধারে এবং দিনের বেলায়ও অনেকে এখানে ময়লা ফেলছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহল চায় না যে এখানে একটি স্থায়ী খেলার মাঠ গড়ে উঠুক। তারা পরিবেশ দূষণের মাধ্যমে মাঠটিকে ব্যবহারের অযোগ্য করে ধীরে ধীরে আবারও দখলে নেওয়ার পায়তারা করছে।
এলাকাবাসী জানান, মাঠটি উদ্ধারের পর তারা ভেবেছিলেন তাদের সন্তানদের খেলাধুলার একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি হবে। কিন্তু এখন আবর্জনার কারণে শিশুরা মাঠে নামতে পারছে না। তাদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই পুরো মাঠটি আবর্জনায় ভরে যাবে এবং দখলদারদের কবলে চলে যাবে। পৌরবাসীর পক্ষ থেকে মাঠটির চারপাশে একটি মজবুত সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ এবং পর্যাপ্ত বালি ফেলে খেলার উপযোগী পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে নবনিযুক্ত কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ. টি. এম. কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "আমি এখানে যোগদান করেছি অল্প কিছুদিন হলো। আপনার মাধ্যমেই মাঠটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারলাম। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, অতিদ্রুত মাঠটি পরিদর্শন করে এটিকে খেলার উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য যা যা করণীয়, তার সবকিছুই করা হবে।"
প্রশাসনের এই আশ্বাসের দ্রুত বাস্তবায়নের দিকেই তাকিয়ে আছে কালীগঞ্জের শিশু-কিশোর ও সাধারণ মানুষ। তারা চায়, মাঠটি আবারও তার আগের রূপে ফিরে আসুক এবং শিশুদের কোলাহলে মুখরিত হোক।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর