• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
মোঃ আসাদুজ্জামান
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৬:২৫ বিকাল

আমতলীর মাদ্রাসায় খাবার নষ্ট ও খেয়ে ফেলার অভিযোগ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

আমতলী উপজেলার ন.ম.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসায় আয়োজিত এক সভায় নিমন্ত্রণ না পেয়ে মাদ্রাসার জন্য তৈরি করা খাবার খেয়ে ফেলা এবং অবশিষ্ট খাবার নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী ও সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজীর নেতৃত্বে আসা ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হোসেন এই অভিযোগ করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আমতলী উপজেলার কালিবাড়ী ন.ম.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। এই ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর ন.ম.ম আমজাদিয়া আলিয়া মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হয়, যেখানে আমতলী সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ ফজলুল হককে সভাপতি করা হয়। কমিটির প্রথম সভা গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। সভা উপলক্ষে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ৫০ জন আমন্ত্রিত অতিথির জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করে। তবে, মাদ্রাসার এই সভায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি, যা গুলিশাখালী ইউনিয়ন ও ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রিপন হাজী নামের এক বিএনপি নেতা মাদ্রাসার একজন শিক্ষকের কাছে আমন্ত্রণ না জানানোর কারণ জানতে চান। এরপর ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী ও সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজীর নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মী মাদ্রাসায় এসে অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করে একই প্রশ্ন করেন। অভিযোগ রয়েছে, তারা শিক্ষকদের গালাগাল করে রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলেন এবং বাকি খাবার যাতে আমন্ত্রিত অতিথিরা খেতে না পারেন, সেজন্য পাতিলে টিস্যু, পানি ও তাদের খাওয়া উচ্ছিষ্ট খাবার ফেলে নষ্ট করে দেন। এরপর তারা শিক্ষক, কর্মচারী ও সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের হুমকি দিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। তাদের ভয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে সাহস পাচ্ছে না। রিপন কাজী তার ফেসবুক আইডি থেকে এই ঘটনার কিছু ছবি "ন.ম.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসায় পিকনিকের কিছু স্মৃতি" ক্যাপশন দিয়ে পোস্ট করলে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং তীব্র নিন্দা সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক ও আমন্ত্রিত অতিথি জানিয়েছেন, মাহবুব কাজী ও রিপন কাজীর নেতৃত্বে আসা ৩০-৩৫ জন বিএনপির নেতাকর্মী তাঁদের দাওয়াত না দেওয়ার কারণ জানতে চান। এরপর তাঁরা শিক্ষক-কর্মচারী ও অতিথিদের গালাগাল করে অতিথিদের জন্য রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলেন এবং কিছু খাবার বাড়িতেও নিয়ে যান। তাঁরা আরও জানান, অবশিষ্ট খাবার যাতে অতিথিরা খেতে না পারেন, তার জন্য খাবারের পাতিলে টিস্যু, উচ্ছিষ্ট খাবার ও নোংরা পানি ফেলে নষ্ট করে দেন।

কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি বলেন, ন.ম.ম আমজাদিয়া মাদ্রাসার ঘটনা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলকেও হার মানিয়েছে। এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

গুলিশাখালী ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী খাবার খেয়ে ফেলার কথা স্বীকার করে বলেন, মাদ্রাসায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী নিয়ে অনুষ্ঠান করায় ও আমাদের দাওয়াত না দেওয়ায় আমরা খাবার খেয়ে ফেলেছি, কিন্তু কোনো খাবার নষ্ট করিনি।

ন.ম.ম আমজাদিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হোসেন বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা মাদ্রাসার সভাকক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক, কর্মচারী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের গালাগাল করেন। এরপর তাঁরা অতিথিদের জন্য রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলেন। অবশিষ্ট খাবারে তাঁরা টিস্যু, উচ্ছিষ্ট খাবার ও নোংরা পানি ফেলে নষ্ট করেছেন। তিনি আরও বলেন, খাবার শেষে তাঁরা আমাদের দেখিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ভয়ে আমি বিষয়টি কাউকে জানাইনি। এমন গর্হিত কাজের সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতাকর্মীদের শাস্তি দাবি জানান তিনি।

আমতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মৃধা এমন গর্হিত কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গর্হিত কাজ। এমন বিতর্কিত কাজের সঙ্গে জড়িত বিএনপির যেই নেতাই হোক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমতলী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মামুন ভিপি বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। দলীয়ভাবে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। অভিযোগ পেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]