
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের চাকুরি জাতীয়করণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে অনতিবিলম্বে সরকারি নিয়মে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা প্রদানের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস)।
আজ রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় আকরাম খাঁ হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এখানে মোঃ সাইদুর রহমান সরকার, আহ্বায়ক, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) এবং মোঃ রেজাউর করিম লিটন, সদস্য সচিব, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) সহ শিক্ষক এবং সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের মূল বক্তব্যে তারা বলেন, শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ এর ছাত্র জনতার আন্দোলনে আত্মাহুতি দান কারী সকল বীর শহীদদের। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বাশিস) একটি প্রাচীন শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষকদের চাকুরি জাতীয়করণ, আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে এই সংগঠন আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। একটি দেশের শিক্ষা হলো জাতির মেরুদন্ড আর শিক্ষক হচ্ছে শিক্ষার মেরুদন্ড। দেশের সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীগণ দ্বারা। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীগণ মাত্র ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও ৫০% উৎসব ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীনে একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নে নিয়োজিত থেকে আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড় সমান বৈষম্য অথচ জাতি গঠনে বেসরকারি শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম। তা ছাড়া শিক্ষক কর্মচারীদের চাকুরির নিরাপত্তা নেই, আর্থিক নিশ্চয়তা নেই, সামাজিক মর্যাদা নেই, অবসর ও কল্যানের নিশ্চয়তা নেই।
শিক্ষকদের গুনগত মান উন্নয়ন করতে হলে শিক্ষকদের চাকুরী জাতীয়করণের বিকল্প নেই। জাতীয় করণ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে অবিলম্বে শিক্ষক কর্মচারীদের সরকারী নিয়মে বাড়ী ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে। মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুসারে অবসরের ৬ মাসের মধ্যে অবসর ও কল্যানের টাকা প্রদান নিশ্চিত করার জোর দাবী জানাচ্ছি। শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরনের Visit Site জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয় করণ এখন সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। তাই জাতির বিবেক শিক্ষক হিসেবে সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবী জানিয়ে আসছি।
বিগত সরকারও এ ব্যাপারে বাস্তব কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি। তাই সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সমান সুযোগ সৃষ্টি মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্টকরণ এবং শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারী ও বেসরকারী বৈষম্য দূরীকরনের লক্ষ্যে নিম্নউল্লেখিত দাবীসমূহ আশু কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি।
• সরকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দুরীকরনের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মচারীদের চাকুরী জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবী।
• সরকারি নিয়মে পুর্নাঙ্গ বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা প্রদান ।
• সরকারি স্কুলের ন্যায় বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এর বেতন ৬ষ্ঠ গ্রেডে এবং সহকারি প্রধান শিক্ষকদের ৭ম গ্রেড সহ টাইমস্কেল প্রদান ।
• কল্যাণ ও অবসর সুবিধার টাকা মহামান্য হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী অবসরের ৬ মাসের মধ্যে প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা বিশ্বাস করি অন্তবর্তীকালীন সরকার শিক্ষাবান্ধব। তাই আমাদের যৌক্তিক দাবীগুলো পূরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ করছি। অন্যথায় আগামী ১৯/১০/২০২৫ রোজ রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর