
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দরবেশপুর গ্রামের ইব্রাহিম বাহিনীর নির্মম সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন তোফাজ্জল মিয়া (২৬) নামের এক যুবক। তিনি বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তোফাজ্জলের হাত ও দুটি পা ভাঙার ছবি গতকাল ফেসবুকে ভাইরাল হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। তবে ইব্রাহিম ও তার লোকজন এখনো পর্যন্ত মামলা করতে দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা মামলা করার জন্য আহত তোফাজ্জলের মাকে বললেও তিনি প্রাণের ভয়ে মামলা করছেন না। বর্তমানে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আহত তোফাজ্জলের পারিবারিক সূত্র ও এলাকাবাসী জানান, জায়গা জবরদখলে বাধা দেওয়ায় দরবেশপুর গ্রামের মৃত হারুন মিয়ার পুত্র তোফাজ্জল মিয়াকে গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফিল্মি স্টাইলে তার বাড়িতে ঘরের দরজা ভেঙে বসতঘরে প্রবেশ করে তার চাচা ইব্রাহিম বাহিনীর প্রধান ইব্রাহিম মিয়া, রহমতউল্লাহসহ তাদের লোকজন। এ সময় হামলা ও নির্মম নির্যাতন চালিয়ে তোফাজ্জলের দুটি পা, একটি হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ভেঙে দেওয়া হয়।
আহত তোফাজ্জল মিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসক জানিয়েছেন, এখনো তিনি শঙ্কামুক্ত নন। প্রাণে বেঁচে গেলেও দুটি পা ও হাত একেবারে ভেঙে যাওয়ায় তিনি পঙ্গু অবস্থায় রয়েছেন। তার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। এদিকে, ঘটনার নয় দিন অতিবাহিত হলেও সন্ত্রাসী ইব্রাহিম ও তার সহযোগীরা বীরদর্পে বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করছে।
এ ব্যাপারে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির সাব-ইন্সপেক্টর ও বিট অফিসার সোহরাব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমরা তোফাজ্জলকে মারপিটের সত্যতা পেয়েছি। আমরা মামলা করার জন্য আহত তোফাজ্জলের মাকে বললেও তিনি প্রাণের ভয়ে মামলা করছেন না। এখন তার মোবাইল বন্ধ পাচ্ছি। তবে আহতের পরিবার এ বিষয়ে মামলা না করায় তারা আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তিনি আরও বলেন, আহত তোফাজ্জল মিয়ার মাতাকে ওই ইব্রাহিম বাহিনী কর্তৃক গত ১২ তারিখ রাতে হাতুড়ে মারপিট করে ও ৮০ হাজার টাকা লুট করে নেওয়ার একটি অভিযোগ এই মারপিটের আগে দেওয়া হয়েছিল, এই বিষয়ে এখনও অভিযোগ দেওয়া হয়নি।
তোফাজ্জলের মা ডালিনা আক্তার মোবাইলে বলেন, আমি ইব্রাহিম ও তার লোকজনের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছি। আমি যদি এ ঘটনায় কোনো মামলা দায়ের করি, ইব্রাহিম আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলছে ছেলের মতো হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি পেটা করবে।
এ বিষয়ে মোবাইলে ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আহত তোফাজ্জল সম্পর্কে আমার ভাতিজা হয়, তার সঙ্গে জায়গা নিয়ে বিরোধ আছে, সে মাতাল, আমাকে মারপিট করার জন্য রাস্তায় বসে থাকে, তাই হাত-পা ভেঙে দিয়েছি। এখন যদি মামলা করে, আবারো সমস্যা হবে, তার মাকে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ কামরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর