• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২ মিনিট পূর্বে
জান্নাতুল বিশ্বাস
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০২ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:০১ দুপুর

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েও ভিক্ষা নয়, সংগ্রামী মফিজের জীবনযাপন

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

নড়াইল-মাগুরা সড়কের দুর্গাপুর এলাকার রেলসেতুর নিচে একটি মাদুর বিছিয়ে চলছে মফিজ উদ্দিনের জীবনসংগ্রাম।

বিস্কুট, চানাচুর, বাদাম, কলা, সিগারেট ও শিশুদের চিপস সাজানো তাঁর ছোট্ট দোকানটিই তাঁর উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম। জন্ম থেকেই তাঁর দুই পা অচল। এক হাতে চারটি এবং অন্য হাতে মাত্র দুটি আঙুল।

প্যাডেল চালিত হুইলচেয়ার তাঁর চলাচলের একমাত্র ভরসা। এমন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েই ষাট বছর ধরে জীবন পার করেছেন তিনি, তবুও দুঃখকে সঙ্গী না করে নিজের শ্রমেই সংসার চালাচ্ছেন মফিজ উদ্দিন।

নড়াইল জেলা শহরের দুর্গাপুর গ্রামে কেটেছে মফিজ উদ্দিনের শৈশব। বাবা নাজিম উদ্দীনের তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি একজন। পরিবারে তাঁর আরও কয়েকজন ভাইবোনও একই ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগেছেন। তবুও তাঁরা ভিক্ষা না করে নিজেদের শ্রম-ঘামেই জীবন কাটাচ্ছেন।

চলতি পথের ক্রেতারা কখনো থেমে তাঁর দোকান থেকে এক-আধটা পণ্য কিনে নেন, আবার অনেকক্ষণ দোকান ফাঁকাই পড়ে থাকে।

মফিজ উদ্দিন জানান, প্রায় পঁচিশ বছর ধরে তিনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সামনে একটি মুদি দোকান চালিয়েছেন। সেখানে বেচাকেনা ভালোই হতো। কিন্তু দোকানঘরটি ভেঙে গেলে টাকার অভাবে আর নতুন করে দোকান তুলতে পারেননি। এতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। এরপর রেলসেতুর নিচে মাদুর পেতে আবার দোকান বসান। প্রতিদিনের আয় খুব বেশি হয় না। বেচাকেনা ভালো হলে দিনে ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মতো লাভ থাকে। এই টাকা দিয়েই চলে ঘরভাড়া, সংসারের খরচ, নিজের ওষুধের খরচ এবং একমাত্র ছোট মেয়ের পড়াশোনার খরচ। তাঁর মেয়ে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। অন্য দুই মেয়েকে তিনি বিয়ে দিয়েছেন। বহু বছর আগেই স্ত্রী মারা গেছেন।

মফিজ আরও বলেন, "বেশি কিছু চাই না। যদি একটা দোকানঘর তুলতে পারতাম, পুঁজির জোগান হলে মালামাল উঠাতে পারতাম, তাহলে আরেকটু ভালোভাবে চলতে পারতাম। কিন্তু যেভাবেই হোক, আল্লাহর ইচ্ছায় আমি ভালো আছি।"

মফিজের এই সংগ্রামী জীবনের কথা এলাকার মানুষও জানেন। দুর্গাপুরের বাসিন্দা কাজী আরাফাত, ইমন সিকদার, পথচারী জাহিদুল ইসলাম ও ইজিবাইক চালক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতিবন্ধকতা নিয়েও এত পরিশ্রম করে বেঁচে থাকা সত্যিই দৃষ্টান্ত। বিত্তবান মানুষ কিংবা সরকার যদি তাঁকে দোকানঘর ও পুঁজি দিয়ে সহায়তা করে, তাহলে তাঁর আত্মমর্যাদা অটুট রেখে বাকি জীবনটা নিশ্চিন্তে কাটাতে পারবেন।

মফিজের বন্ধু লুৎফার মোল্যা প্রায়ই দোকানে এসে তাঁকে সাহায্য করেন। তিনি বলেন, "মফিজ আমার এলাকার ভাই-বন্ধু। ছোটবেলা থেকেই ও খেটে খায়। আয় হলে খায়, না হলে না খায়। কিন্তু কারও দুয়ারে গিয়ে হাত পাতেনি।"

নড়াইল সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুজা উদ্দীন জানান, মফিজ উদ্দিনকে ইতোমধ্যেই একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারি সুযোগ-সুবিধা যেমন সুদমুক্ত ঋণ বা অন্য যেকোনো সহায়তার আওতায়ও তাঁকে আনার চেষ্টা চলছে।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com