রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত দুই দিনে একাধিক ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শুক্রবারের তীব্র কম্পনের পর শনিবার আশুলিয়ার বাইপাইলে আবারও কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ধারাবাহিক ভূ-কম্পন বাংলাদেশের জন্য বিপদের সতর্কবার্তা।
কেন ভূমিকম্প বাড়ছে?
ভূতত্ত্ববিদরা জানান—পৃথিবীর ভূত্বক সাতটি বড় প্লেট ও অসংখ্য সাব-প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত। এ প্লেটগুলো নরম স্তরের ওপর ভাসমান অবস্থায় থাকে। একটির সঙ্গে আরেকটির সংঘর্ষ, সরে যাওয়া অথবা চাপ সৃষ্টির ফলে শক্তি জমতে থাকে, যা সীমা অতিক্রম করলে ভূমিকম্প হয়।
বাংলাদেশ তিনটি বড় টেকটোনিক প্লেট—ইন্ডিয়ান প্লেট, ইউরেশিয়ান প্লেট এবং বার্মা মাইক্রো-প্লেট—এর সংযোগস্থলে অবস্থিত। এ অঞ্চলে শতবর্ষ জমা শক্তি ভবিষ্যতে বড় ধরনের ভূমিকম্প ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার জানান— সুনামগঞ্জ থেকে মণিপুর–মিজোরাম পর্যন্ত অঞ্চলটি একটি ‘লকড জোন’এখানে লুকিয়ে আছে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বার্মা প্লেটের নিচে ভারতীয় প্লেট তলিয়ে যাওয়ায় সাবডাকশন জোনে বিপুল শক্তি জমা হচ্ছে
বাংলাদেশে কোন অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান রুবাইয়াত কবির বলেন:
সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল (জোন-১)
সিলেট
ময়মনসিংহ
নেত্রকোনা
কারণ: এই অঞ্চলগুলো ডাউকি ফল্ট, শিলং প্লেট, মধুপুর ফল্ট এবং মিয়ানমার প্লেট বাউন্ডারির খুব কাছে।
মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল (জোন-২)
ঢাকা
চট্টগ্রাম
কক্সবাজার
রংপুর
রাজশাহী (আংশিক)
এই অঞ্চলগুলো ভূমিকম্প উৎসের তুলনামূলক কাছাকাছি এবং ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় ঝুঁকি বেশি।
তুলনামূলক নিরাপদ অঞ্চল (জোন-৩ – নিম্ন ঝুঁকি)
সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, দেশের পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ।
খুলনা বিভাগ
খুলনা
যশোর
সাতক্ষীরা
নড়াইল
মাগুরা
ঝিনাইদহ
কুষ্টিয়া
চুয়াডাঙ্গা
মেহেরপুর
বরিশাল বিভাগ
বরিশাল
পটুয়াখালী
ভোলা
পিরোজপুর
বরগুনা
ঝালকাঠি
রাজশাহী বিভাগের পশ্চিমাংশ
(উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল সাধারণত অপেক্ষাকৃত নিরাপদ), কারণ: এই এলাকাগুলো প্রধান ফল্ট লাইনের (ডাউকি, মধুপুর বা বার্মা প্লেট বাউন্ডারি) থেকে দূরে এবং সাবডাকশন জোনের সরাসরি প্রভাব কম।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর