
বরগুনায় কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর ফলে জেলার বিভিন্ন সড়ক, বাজার ও গ্রামীণ জনপদ জলমগ্ন হয়ে গেছে, যার কারণে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
টানা বৃষ্টিতে বরগুনা শহর ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরগুলোর দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
জলমগ্নতার কারণে সাধারণ মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং এতে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। দোকানপাট কম খোলায় এবং যাতায়াতে অসুবিধা হওয়ায় সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন। নিম্ন আয়ের মানুষরা এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কারণ তাদের জীবন ও জীবিকার তাগিদে বৃষ্টি উপেক্ষা করেও বাইরে বের হতে হচ্ছে।
লঘুচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যা উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানেই জনজীবনকে বিপর্যস্ত করেছে। টানা বৃষ্টির কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে এবং এতে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে যারা দৈনন্দিন শ্রমের ওপর নির্ভরশীল, তাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এই নিম্নচাপের প্রভাবের সঙ্গে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে এবং এভাবে আরও দুই-তিন দিন বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়েছে। এটি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরসমূহের ওপর দিয়ে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। নিম্নচাপের কেন্দ্রে ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।
সর্বশেষ খবর