• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ০৮:৫৮ সকাল

৩৫ বছর পর আজ রাকসু নির্বাচন, ভোটগ্রহণ শুরু সকাল ৯টায়

ফাইল ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), সিনেট ছাত্রপ্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে অপেক্ষার প্রহর শেষ। 

এ নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কি হবে না—এমন সংশয় ও প্রশ্ন ছিল রাবির শিক্ষার্থীদের ও নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মনে। তবে সব সংশয় কেটেছে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) আবার নির্বাচন হচ্ছে। এ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হবে সকাল ৯টা থেকে। কেন্দ্রে-কেন্দ্রে চলছে প্রস্তুতি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হল দখল, গেস্টরুম সংস্কৃতি ও আধিপত্যের রাজনীতি এখন আপাতত বন্ধ আছে। কোনো রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের কর্মসূচিতে যাওয়া এখন আর শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রত্যাশা জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আসা এই পরিবর্তনগুলো টেকসই রূপ পাবে, ছাত্ররাজনীতি ফিরবে সুস্থ ধারায়, আসবে গুণগত পরিবর্তন, শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে। প্রার্থীরাও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যাকে কেন্দ্র করে তাদের ইশতেহার সাজানোর চেষ্টা করেছে। এইসব কিছুর মধ্যেই বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে রাকসু, সিনেট ছাত্রপ্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচন।

রাকসু প্রতিষ্ঠার ৬৩ বছরের মাথায় ১৫তম নির্বাচন আজ। এর মাঝে পাকিস্তান আমলে নির্বাচন সবচেয়ে বেশি ৮ বার। ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তীতে সব স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে রাকসু ও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, ছাত্র আন্দোলনের সোনালি অর্জনগুলো তা ছাত্র সংসদের কারণেই সম্ভবপর হয়েছিল। স্বাধীন হওয়ার পরও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব তৈরিতে রাকসুর ভূমিকা ছিল। যদিও স্বাধীনতার পাঁচ দশকে রাকসু নির্বাচন হয়েছে সবচেয়ে কম, মাত্র ছয়বার। তবে ৮০'র দশকের পরবর্তী সময়ে কার্যত ঝিমিয়ে পরা এই রাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে।

প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠনগুলোর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীদের সৃজনশীল ও ভিন্নধর্মী প্রচারণা, সময়োপযোগী ইশতেহার ও ডিজিটাল ক্যাম্পেইন ভোটযুদ্ধকে করেছে আরও রঙিন। ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করেছে উৎসবমুখর পরিবেশ, যেখানে নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে এবং স্বাধীনভাবে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করছেন শিক্ষার্থীরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দু-একটি সংগঠনের মধ্যকার ঐতিহ্যগত দ্বন্দ্ব ছাপিয়ে এবারকার নির্বাচন হতে যাচ্ছে রাকসুর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। বেশ কয়েকটি দিক থেকে রেকর্ড গড়েছে এবারের নির্বাচন। যার মধ্যে রয়েছে সর্বোচ্চসংখ্যক প্রার্থীর লড়াই, প্রায় ২৯ হাজার শিক্ষার্থীর একসঙ্গে ভোটদান এবং প্রথমবারের মতো প্রার্থীতা বাছাইয়ে ডোপ টেস্ট।

৪৩ পদে লড়ছেন ৯১৮ জন প্রার্থী

নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, সকল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। রাকসুর ২৩টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩০৫ জন, যার মধ্যে নারী ২৬ জন। এ ছাড়া, সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন এবং হল সংসদ নির্বাচনে ১৫টি পদে মোট ১৭টি হলে ৫৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যা রাকসুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১১ হাজার ৩০৫ এবং ছাত্র ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ জন। ৯টি ভবনে ১৭ কেন্দ্রের ৯৯০টি বুথে প্রত্যেক ভোটারের রাকসু ও হল সংসদের মোট ৪৩টি পদে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকছে।

এবারই প্রথম আবাসিক হলের বাইরে রাকসু সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদের ভোট গ্রহণ হচ্ছে। ক্যাম্পাসের নির্ধারিত ৯টি ভবনে (৯৯০টি বুথ) শিক্ষার্থীরা ভোট দেবেন। সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী অ্যাকাডেমিক ভবনে ভোট দেবেন জুলাই-৩৬ ও রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা (৪৬৬৫ ভোট)। মমতাজ উদ্দিন কলা ভবন নির্ধারণ করা হয়েছে মন্নুজান হলের জন্য (ভোট ২৩৭৮)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনে ৩টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন তাপসী রাবেয়া, বেগম খালেদা জিয়া, রহমতুন্নেসা হলের শিক্ষার্থীরা (ভোট ৪২৮২)।

জাবির ইবনে হাইয়ান বিজ্ঞান ভবনে দুটি কেন্দ্রে ভোট দেবেন শহীদ হবিবুর রহমান ও শামসুজ্জোহা হলের ভোটাররা (ভোট ৪২৫৫)। জামাল নজরুল বিজ্ঞান ভবনের দুটি কক্ষে বিজয়-২৪ ও নবাব আবদুল লতিফ হলের ২৬৪৭ জন ভোটাররা ভোট দেবেন । সত্যেন্দ্রনাথ বসু অ্যাকাডেমিক ভবনে ফজলুল হক ও মতিহার হলের মোট ২৮৬৪ শিক্ষার্থী, জগদীশ চন্দ্র ভবনে মাদার বখশ ও সোহরাওয়ার্দী হলের জন ৩৭৫৫ ভোটাররা ভোট দেবেন। এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে সৈয়দ আমীর আলী ও শাহ মখদুম হলের ৩০৪২ শিক্ষার্থীদের ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

ভোটারদের মানতে হবে যেসব নিয়ম

নির্বাচন কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে ভোটকেন্দ্রে প্রর্থীদের করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ভোটারকে শিক্ষার্থী পরিচয়পত্র (Student ID Card) সঙ্গে আনতে হবে। এক কেন্দ্রের ভোটার অন্য কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পূর্বে ভোটার তালিকায় নাম, ভোটকেন্দ্র ও টেবিল নম্বর যাচাই করে নিতে হবে। ভোট প্রদানের পূর্বে আঙ্গুলে অমোচনীয় কালি দেওয়া হবে।

এছাড়া ৩টি করণী ও ৪টি বর্জনীয় বিষয় ভোটারদের মেনে চলতে বলা হয়েছে। এগুলো হলো—শান্তিপূর্ণভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি ও নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। পছন্দের প্রার্থীর নামের পার্শ্বের চারকোনা ঘরে সরবরাহকৃত সাইনপেন দিয়ে ক্রস (×) চিহ্ন দিতে হবে। ভোট প্রদান শেষে ভোটকেন্দ্রের ৫০ মিটারের মধ্যে অবস্থান করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে প্রচার-প্রচারণা করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে বিশৃংখলা বা ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। ভোটকেন্দ্রে মোবাইল, ক্যামেরা বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে আনা যাবে না।

রাকসুর ভোটের ইতিহাস

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তিন বছর পর প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় ১৯৫৬-৫৭ মেয়াদে। তখন এই সংসদের নাম ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (রাকসু)। ১৯৬২ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ রাকসু নামে যাত্রা শুরু করে। এরপর নির্বাচন হয়েছে ১৪ বার। সর্বশেষ ১৯৯০ সালে রাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন রুহুল কবির রিজভী। তিনি রাবি ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র। ১৯৬২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সময়ে ২৮ বার নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়েছে মাত্র ১৪ বার। 

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) হিসেবে নির্বাচিত হন হায়দার আলী, নূরুল ইসলাম ঠান্ডু, ফজলুর রহমান পটল, ফজলে হোসেন বাদশা, রাগিব আহসান মুন্না। ৯০-এর পর থেকে রাকসু যেন অমাবস্যার চাঁদ হয়ে যায়।

এরপর বিভিন্ন সময় ছোটখাটো আন্দোলন, সর্বশেষ ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনের পর কিছু দাবি উঠলেও রাকসু আর শেষমেশ বাস্তবায়িত হয়নি।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]