
জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় একে একে পৌঁছাচ্ছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। বিকেল গড়াতেই অনুষ্ঠানস্থল সরব হয়ে উঠেছে অতিথিদের আগমনে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত দেখা গেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকনকে।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
এরপর বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত নেতারা মঞ্চে বসার আগে একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। দক্ষিণ প্লাজার চারপাশে নিরাপত্তা বলয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
উল্লেখ্য, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আগেই ঘোষণা দিয়েছিল তারা জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবে। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত তারা সনদে সই করবে না।
এদিকে, বাম ধারার চারটি দল– বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) এবং বাংলাদেশ জাসদ জানিয়েছে, সংশোধিত খসড়া না পেলে তারা সনদে সই করবে না।
জুলাই সনদকে ঘিরে সারা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনার মধ্যে এ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ সনদ কেবল ঐকমত্যের প্রতীক নয়, আগামী জাতীয় রাজনীতির গতি ও নতুন জোট বিন্যাসে এর প্রভাব পড়বে সরাসরি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ৬টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।
গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়।
গত ১৬ আগস্ট রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে ওই খসড়ায় কিছু ত্রুটি থাকায় তা সংশোধন করে নির্ভুল খসড়া পাঠানো হয়। এরপর গত ২০ আগস্ট ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটির ওপর যেকোনো ধরনের মতামত দেওয়ার সময় ২২ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরপর আবারও জুলাই সনদের নানা বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কমিশনের আলোচনা হয়।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর