জাকাত ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি ফরজ বিধান। এর মাধ্যমে সমাজে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হয় এবং দরিদ্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। জাকাত শব্দের অর্থ পবিত্রতা, শুদ্ধি ও বৃদ্ধি।
ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে শরিয়তে নির্ধারিত সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ কোরআনে বর্ণিত আট শ্রেণির যেকোনো এক শ্রেণির মানুষের কাছে দান করাকে জাকাত বলা হয়।
ফিকহে হানাফি মতে, সোনা-রূপা ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত যাই হোক না কেন, যদি তা নিসাব পরিমাণে পৌঁছে যায়, তাহলে তাতে জাকাত ওয়াজিব। অর্থাৎ, কারও কাছে যদি সাড়ে সাত ভরি (৭.৫ ভরি) বা তার সমপরিমাণ মূল্যের স্বর্ণ থাকে, তবে তাতে জাকাত দিতে হবে।
একজন ব্যক্তি যদি কেবল আংটি বা কানের দুল ব্যবহার করেন এবং অন্যান্য গহনা না রাখেন, তবুও স্বর্ণের নিসাব পরিমাণ মূল্য হলে জাকাত আদায় করা ফরজ হবে।
জাকাত আদায়ের সময় চন্দ্রবর্ষ পূর্ণ হলে, তখনকার বাজারমূল্যে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে লাখে আড়াই হাজার টাকা, হাজারে ২৫ টাকা বা শতে আড়াই টাকা হারে (অর্থাৎ ২.৫%) জাকাত দিতে হয়।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, যারা সোনা-রূপা পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাময় শাস্তির সুসংবাদ দাও। (সুরা আত-তওবা, আয়াত ৩৪)
হজরত আবু কামিল (রহ.) আমর ইবনে শুআইব (রহ.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, এক নারী তার কন্যাসহ রসুলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হন। মেয়ের হাতে ছিল দুটি ভারী সোনার কাঁকন। নবীজি (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা কি এর জাকাত দাও? নারী বললেন, না। তখন নবীজি (সা.) বললেন, তুমি কি চাও যে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তোমাকে এর পরিবর্তে আগুনের কাঁকন পরিয়ে দেবেন?
এ কথা শুনে নারী সঙ্গে সঙ্গে কাঁকন খুলে নবীজি (সা.)-এর সামনে রেখে বললেন, এ দুটি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের জন্য। (তিরমিজি, নাসাঈ, আবু দাউদ ১৫৬৩)
ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, জাকাত শুধু সম্পদের পরিশুদ্ধিই নয়। বরং এটি সমাজে সহানুভূতি ও সমতার ভিত্তি স্থাপন করে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর