দেশের পাঁচটি বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক—এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক—এর লাখো গ্রাহক বর্তমানে ভয়াবহ অনিশ্চয়তা ও ভোগান্তিতে পড়েছেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ, এসব ব্যাংক থেকে নিজেদের সঞ্চিত অর্থ তোলা যাচ্ছে না, এমনকি মেয়াদ শেষে ডিপোজিটের মুনাফাও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
লাখো গ্রাহকের টাকার সংকট
বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, এই পাঁচটি ব্যাংকে গ্রাহকরা কয়েক হাজার টাকার বেশি তুলতে পারছেন না, অনেকেই কোনো অর্থই পাচ্ছেন না। সংগঠনটির আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচি বলেন, “আমানতকারীদের অর্থ আত্মসাৎকারীদের সম্পদ জব্দ করে দ্রুত বিক্রি করা হোক এবং গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক।”
সদস্যসচিব খুরশীদ জামিল চৌধুরী অভিযোগ করেন, “আগে ব্যাংকগুলো টাকা দিতে পারত না, এখন ডিপোজিট নিয়েও প্রতারণা শুরু করেছে।”
সরকারের সহায়তা ও একীভূতকরণ পরিকল্পনা
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংক খাত স্থিতিশীল করতে ১৪টি ব্যাংকের পর্ষদ বিলুপ্ত করে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দেয়। তবুও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বর্তমানে প্রায় ৯২ লাখ গ্রাহক এসব ইসলামী ব্যাংকের অর্থ ফেরত পেতে হিমশিম খাচ্ছেন।
নতুন ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব
গত ৯ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের সভায় সংকটাপন্ন পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করে নতুন একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রস্তাবিত ব্যাংকের সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘ইন্টার ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’ বা ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড পিএলসি’।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, একীভূত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন ব্যাংক **সব দায় ও সম্পদ গ্রহণ করবে, এবং এতে কোনো কর্মচারী চাকরি হারাবেন না, কোনো আমানতকারীও আমানত হারাবেন না।
তবে মাঠপর্যায়ের গ্রাহকরা বলছেন, এই আশ্বাসেও আতঙ্ক ও হতাশা কাটছে না, কারণ ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার বাস্তব পরিস্থিতি এখনও একই রকম।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর