• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২০ মিনিট পূর্বে
প্রচ্ছদ / রাজনীতি / বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৯:২৪ সকাল
শাপলা না দিলে

ইসি পুনর্গঠনের দাবিতে কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি এনসিপি'র

ফাইল ফটো

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে দলটির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) টানাপোড়েন চলছে প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে। 

কয়েক মাস ধরেই এ বিষয়ে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় চিঠি আদান-প্রদান ও সাক্ষাৎ হলেও সমাধান মেলেনি—দুপক্ষই নিজ নিজ অবস্থানে অনড়। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ইসি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বিধিমালায় ‘শাপলা’ প্রতীক না থাকায় এনসিপিকে সেটি বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ নেই। 

কমিশন বরং নিজেরা বিবেচনা করে অন্য কোনো প্রতীক নির্ধারণ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবে। যদিও এনসিপি এখনো তাদের পছন্দের প্রতীক ‘শাপলা’ পাওয়ার দাবিতে অনড় রয়েছে। শেষ পর্যন্ত যদি শাপলা প্রতীক না দেওয়া হয়, তাহলে ইসি পুনর্গঠনের দাবিতে রাজপথের কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে দলটি।

নির্বাচন কমিশন বলছে, বিধিমালায় না থাকায় শাপলা প্রতীক জাতীয় নাগরিক পার্টিকে দেওয়া হবে না। কমিশন বরং নিজেরা বিবেচনা করে অন্য একটি প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবে। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিধিমালায় শাপলা প্রতীক না থাকায় এনসিপিকে সেটি দেওয়ার সুযোগ নেই। এটি আমরা আগেও বলেছি। নির্বাচন কমিশন নিজ বিবেচনায় অন্য প্রতীক দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবে।’

ইসির এমন কড়া বার্তা সত্ত্বেও আগের অবস্থানেই অনড় এনসিপি। এ নিয়ে কঠোর অবস্থানেরই ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের বেশিরভাগ নেতা। সরল পথে দাবি আদায় না হলে রাজনৈতিক লড়াইয়ের দিকে হাঁটার প্রস্তুতিও নিচ্ছে দলটি। শাপলা পাওয়া বা না পাওয়ার মধ্য দিয়ে মূলত রাজনীতির মাঠে নিজেদের অবস্থান ও টিকে থাকার অগ্নিপরীক্ষা দিতে চান এনসিপির নেতারা।

তারা বলছেন, শেষ সময় পর্যন্ত শাপলার জন্য অপেক্ষা করবেন। শাপলা না দিয়ে নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করবে না বলেই মনে করছেন এনসিপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। তারা জানিয়েছেন, যদি কোনো ধরনের আইনি বা সাংবিধানিক ব্যাখ্যা ছাড়া শাপলা বাদ দিয়ে ইসি গেজেট প্রকাশ করে, তাহলে সেটি কোনোভাবেই মানবেন না। শুধু তাই নয়, ইসি পুনর্গঠন দাবিতে কর্মসূচি পালন করবেন। এ ছাড়া বর্তমান ইসির অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করারও ঘোষণা দিতে পারেন তারা।

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, ‘কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া শাপলা প্রতীক বরাদ্দ না পেলে বর্তমান ইসি পুনর্গঠনের জন্য রাজপথ ছাড়া আমাদের বিকল্প নেই। আমরা এই পক্ষপাতদুষ্ট ইসির অন্যায্য আচরণের বিরুদ্ধে এবং ইসি পুনর্গঠনের দাবিতে আন্দোলনে নামব। একই সঙ্গে রাজনৈতিক ও আইনিভাবে মোকাবিলা করব।’

প্রতীক ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ইঙ্গিত দেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি না ইসি শাপলা ছাড়া গেজেট প্রকাশ করবে। এখন পর্যন্ত আমরা মনে করি, শাপলা প্রতীক আমরা পাব। না পেলে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।’

গত জুনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার সময় শাপলার পাশাপাশি কলম ও মোবাইল ফোন প্রতীক চেয়েছিল এনসিপি। তবে পরে দলটি ওই দুটি প্রতীক থেকে সরে এসে শুধু শাপলাতেই আটকে থাকে। একদিকে শাপলার বাইরে যেতে রাজি নয় এনসিপি, অন্যদিকে ইসির রাজনৈতিক দলের প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকায় দলটির আবেদন বারবার নাকচ করে দিয়েছে কমিশন।

সর্বশেষ গত বুধবার প্রতীক হিসেবে শাপলা বরাদ্দ পাওয়ার আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরে ইসি কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এতে বলা হয়, জাতীয় প্রতীকের চারটি স্বতন্ত্র উপাদানের মধ্যে শাপলা হচ্ছে একটি। কিন্তু অন্য উপাদানগুলোর মধ্যে বিএনপিকে ‘ধানের শীষ’ এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডিকে ‘তারা’ প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এনসিপি নেতারা বলছেন, ‘শাপলা জাতীয় ফুল’ এমন অজুহাতও ধোপে টেকে না। কারণ জাতীয় ফল ‘কাঁঠাল’কে এরই মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আবার তৃণমূল বিএনপি নামের একটি দলকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীক। সুতরাং ‘শাপলা’ জাতীয় ফুল হলেও দলের প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে আইনগত কোনো বাধা নেই। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা, ২০০৮-এর সংশোধন করে শাপলা, সাদা শাপলা অথবা লাল শাপলা—এই তিনটি প্রতীককে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হোক। এরপর যেন এই প্রতীকগুলোর যে কোনো একটি এনসিপিকে বরাদ্দ দেওয়া হয়—এমনটাই দাবি জানায় দলটি। এর আগে গত ৭ অক্টোবর আবারও শাপলা প্রতীক চেয়ে নির্বাচন কমিশনকে প্রতীকের সাতটি নমুনা পাঠায় এনসিপি। তবে সেটিও আমলে নেয়নি কমিশন।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘শাপলা ছাড়া আপাতত আমাদের সেকেন্ড অপশন (দ্বিতীয় বিকল্প) নেই। যদি না দেয়, সে ক্ষেত্রে ইসি কেন শাপলা দিচ্ছে না, তার আইনি ও সাংবিধানিক ব্যাখা দিতে হবে। এর বাইরে গেজেট প্রকাশ করলে, সেটি হবে স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ। এ ধরনের আচরণ ও ফ্যাসিস্ট কাঠামো রেখে এই ইসির অধীনে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব না। এই ইসি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তো পরের কথা, কোনোভাবেই ন্যূনতম সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য পারঙ্গম নয়। দ্বিদলীয় ভাগাভাগির মাধ্যমে ইসি তার সব নিরপেক্ষতা হারিয়েছে।’

গত রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, শাপলা প্রতীকের জন্য তারা তাদের অবস্থানে দৃঢ় রয়েছেন। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শাপলাকে অবশ্যই তারা অর্জন করবেন।

শাপলা প্রতীক নিয়েই আগামী সংসদ নির্বাচনে এনসিপি অংশগ্রহণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। গতকাল টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে সংগঠনের জেলা সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সারজিস বলেন, ‘আমরা মনে করি, শাপলা না দেওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। যেহেতু আইনগত বাধা নেই। আমাদের জায়গা থেকে শাপলা আদায় করে নেব।’

তিনি বলেন, ‘যখন একটা জিনিস আমার প্রাপ্য, এনসিপির প্রাপ্য, যখন সেটা দেওয়া হবে না—অবশ্যই স্বেচ্ছাচারী আচরণের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে। এনসিপির যদি প্রয়োজন হয়, এনসিপি এই লড়াইটা রাজনৈতিকভাবে রাজপথে করবে। যদি প্রয়োজন হয় বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ৪৯৫টি উপজেলার এনসিপির অভ্যুত্থানের নেতারা রাজপথে নেমে এই অধিকারের জন্য লড়াই করবেন। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, আমরা শাপলা প্রতীক নিয়েই আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।’

অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে কোনো প্রতিষ্ঠানের ‘স্বেচ্ছাচারী’ আচরণ এনসিপি এবং তরুণ প্রজন্ম মেনে নেবে না উল্লেখ করে সারজিস আলম আরও বলেন, ‘কোনো আইনি বাধা না থাকা সত্ত্বেও যে প্রতীক শাপলা আমরা চেয়েছিলাম, সেটি দিতে নানান টালবাহানা করা হচ্ছে। বিভিন্ন অযৌক্তিক কারণ দেখানো হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, যেহেতু কোনো আইনি বাধা নেই। আমরা আমাদের জায়গা থেকে অবশ্যই প্রতীক হিসেবে শাপলাকে এনসিপির জন্য চাই এবং শাপলা প্রতীক নিয়েই আগামী সংসদ নির্বাচনে এনসিপি অংশগ্রহণ করবে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে শাপলা আদায় করে নেব।’

এর আগে এক বক্তব্যে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘কোনো আইনি ব্যাখ্যা না দিয়ে নিজের মতো আমাদের ওপর প্রতীক চাপিয়ে দেওয়ার যে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন, সেটা তাদের স্বেচ্ছাচারী আচরণ।

কমিশন কোনো সংস্থা বা রাজনৈতিক দলের দ্বারা প্রভাবিত কি না, সেই বিষয়গুলো এখন খুঁজে দেখার সময় এসেছে।’

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]