শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভারত সীমান্ত সংলগ্ন পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারোমারী সাধু লিওর খ্রিস্টধর্মপল্লীতে ‘আশার তীর্থযাত্রী, ফাতেমা রাণী মা মারিয়া’ এই মূল সুরের উপর ভিত্তি করে প্রতি বছরের মতো এবারও শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী বার্ষিক তীর্থোৎসব”।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল থেকে পাপ স্বীকারের মধ্য দিয়ে দেশের রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় ‘ফাতেমা রাণীর তীর্থোৎসব’ শুরু হয়। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থযাত্রা শুক্রবার বেলা সাড়ে বারোটায় শেষ হচ্ছে। এতে হাজার হাজার খ্রিস্টভক্তদের আগমনে ইতিমধ্যে তীর্থস্থান জুড়ে তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ। তীর্থ এলাকা সাজানো হয়েছে রঙিন আলোকসজ্জায়। আর নিরাপত্তা জোরদারে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আয়োজক কমিটি সুত্র জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভিন্ন ভিন্ন মুল সুরে দুই দিনব্যাপী নিয়মিতভাবে পালিত হয় এই ধর্মীয় ফাতেমা রাণীর তীর্থযাত্রা। শুধু শেরপুর জেলা নয় দেশের বিভিন্ন জেলা এবং প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও হাজারো রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান পুণ্যার্থীরা অংশ নিচ্ছেন এই তীর্থযাত্রায়। এখানে স্থাপন করা হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ ৫৫ ফুট উচু মা মারয়িার মুর্তি। আর এর সামনে রয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। সেখানে রাতদিন প্রার্থনা করেন খ্রিস্টভক্তরা। এই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে আলোক শোভাযাত্রা। রাত আটটার সময় অনুষ্ঠিত হয় হাজার হাজার খ্রিস্টভক্তদের অংশগ্রহনে মোমবাতি জ্বালিয়ে বর্ণিল আলোক শোভাযাত্রা। তখন পুরো পাহাড়ি এলাকা মোমবাতির আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে। এছাড়া পাপ স্বীকার, জপমালার প্রার্থনা, নিশি জাগরণ, জীবন্ত ক্রুশের পথ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয় মহা খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠান। এ বারের তীর্থোৎসবে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত আছেন ভ্যাটিকানের এম্বাসেডর ও পোপের বিশেষ প্রতিনিধি আর্চবিশপ কেভিন রেনডাল।
আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক ও বারোমারী মিশনের পালপুরোহিত রেভারেন্ড ফাদার তরুণ বনোয়ারী জানান, এ বারের তীর্থ যাত্রায় হাজার হাজার দেশি-বিদেশি খ্রিস্টভক্তরা অংশগ্রহন করেছেন। আর উৎসবমুখর পরিবেশে তীর্থোৎসব সফলভাবে সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।
এদিক, তীর্থোৎসবে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ র্যাব, বিজিবি, আনসার ভিডিবি ও স্থানীয় প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। আইন শৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ নজরদারিও থাকছে পুরো এলাকা জুড়ে।
এ বিষয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম ও সহকারী পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তীর্থ এলাকা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে জানান, ইতোমধ্যে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক তীর্থোৎসব বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। এই উৎসব নির্বিঘ্নে করতে আমরা সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করেছি।
কুশল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর