• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
প্রচ্ছদ / রাজনীতি / বিস্তারিত
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:৫৯ বিকাল

বর্তমান অবস্থান ও নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনার দীর্ঘ সাক্ষাৎকার

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ভারতের জনগণ তাকে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছেন এবং এই সহায়তা তিনি কখনও ভুলবেন না। ভারতের জনপ্রিয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস-এ প্রকাশিত এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা তার বর্তমান অবস্থান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, আসন্ন নির্বাচন ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করেছেন।

ভারতে আশ্রয় নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি ভারতের জনগণের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। তারা আমাকে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছেন। এই মানবিক সহায়তা ও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব আমি কখনও ভুলব না।”

তিনি জানান, ২০২৪ সালের আগস্টে তার সরকারের পতনের পর থেকে তিনি ভারতে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। এ সময় তিনি ভারতের জনগণ ও সরকারের সহায়তাকে “অপরিমেয় মানবিকতা” বলে উল্লেখ করেন।

“ইউনূস সরকার উগ্র ও সহিংস নীতি গ্রহণ করেছে”

শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস উগ্রপন্থীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, যা বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের ভিত্তি দুর্বল করে দিচ্ছে।

তার ভাষায়, “ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। তার সরকারের সহিংস, চরমপন্থী ও অবাস্তব নীতি দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।”

তিনি আরও বলেন, “এই সরকারের অধীনে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বারবার হামলার শিকার হচ্ছে, এবং ঢাকার রাস্তাগুলো এখন নিরাপদ নয়।”

“আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সংবিধান লঙ্ঘন”

সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রেখেছে, যা সরাসরি সংবিধানবিরোধী।

“এই নিষেধাজ্ঞা মানে হলো ১৭ কোটি মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া। এমন নির্বাচন বৈধ হতে পারে না,” বলেন তিনি।

তিনি জানান, আওয়ামী লীগ আইনি, কূটনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।

“আমার বিরুদ্ধে মামলা সাজানো ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত”

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বর্তমানে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ চলছে। প্রসিকিউশন তার মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন,

“এই অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। একটি অবৈধ সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করার জন্য এই মামলা সাজিয়েছে। আদালতটি আসলে একটি প্রহসন, যেখানে বিচার নয়, প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, আদালতে উপস্থাপিত অডিও ও ভিডিও প্রমাণগুলো বিকৃত করা হয়েছে, এবং কোনো নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা দেশে বিদ্যমান নেই।

“আমি চাই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ICC) ন্যায়বিচার হোক, কারণ বাংলাদেশে এমন কোনো আদালত নেই যেখানে নিরপেক্ষভাবে বিচার পাওয়া সম্ভব,” যোগ করেন তিনি।

“২০২৪ সালের আন্দোলনে আমার ভূমিকা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে”

শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র ও নাগরিক আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের ঘটনা বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।

“আমি কখনো নিরাপত্তা বাহিনীকে জনগণের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিইনি। কিছু কর্মকর্তার ভুল সিদ্ধান্তে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমাকে দায়ী করা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়,” বলেন তিনি।

তিনি জানান, তার সরকার তখন একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল, কিন্তু ইউনূস প্রশাসন ক্ষমতায় এসে তা বাতিল করেছে।

“বাংলাদেশে এখন সংখ্যালঘুরা নিরাপদ নয়”

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে শেখ হাসিনা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরেন।

“আমাদের সময়ে বাংলাদেশ ছিল ধর্মীয় সহনশীলতার দেশ। কিন্তু এখন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও পাহাড়ি আদিবাসীসহ সংখ্যালঘুরা প্রতিদিন সহিংসতার মুখে পড়ছে,” বলেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, ইউনূস সরকার ধর্মীয় উগ্রবাদীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হামলা রুখতে ব্যর্থ হচ্ছে।

“ইউনূস প্রশাসন পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ, ভারতবিরোধী মনোভাব স্পষ্ট”

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনূস প্রশাসনের সময় ভারতবিরোধী বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে এবং পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা হচ্ছে।

“ভারতের উত্তর-পূর্বে সন্ত্রাসে জড়িত অনেক ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপ সরাসরি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য হুমকি,” বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “ইউনূসের চরমপন্থী নীতি শুধু বাংলাদেশকেই নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াকেই অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।”

“অর্থনীতি ধ্বংসের পথে, উন্নয়ন স্থবির”

শেখ হাসিনা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক নীতির কারণে বাংলাদেশ ভয়াবহ মন্দার দিকে যাচ্ছে।

“আমাদের সময়ে অর্থনীতি ৪৫০ শতাংশ বেড়েছিল, বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও রপ্তানিতে রেকর্ড অর্জন হয়েছিল। এখন IMF পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিয়েছে,” বলেন তিনি।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, চীন ও পাকিস্তানের প্রভাব বাড়ছে এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো স্থবির হয়ে পড়েছে।

“যে উন্নয়ন আমরা অর্জন করেছিলাম, তা এখন হুমকির মুখে। ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতা দুর্বল হচ্ছে,” বলেন তিনি।

“বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে”

শেষে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ আবারও সংবিধান ও গণতন্ত্রের পথে ফিরবে। একটি অবৈধ সরকার যতদিনই ক্ষমতায় থাকুক, জনগণের ইচ্ছার কাছে টিকতে পারবে না।”

তিনি ভারতের জনগণ ও সরকারের প্রতি আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে গড়া। আমি বিশ্বাস করি, এই বন্ধুত্ব অটুট থাকবে।”

সাজু/নিএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]