একসময় যাদের হাতে ১ টাকা থাকত তারাই ধনী হতো। এখন সেই টাকার প্রায় কোনও মূল্য নেই। অর্থ বিভাগের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে গত চার দশকে টাকার ক্রয়ক্ষমতা কতটা কমে গেছে তার এক ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে।
অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরের এক টাকার ক্রয়ক্ষমতা ২০১৪ সালের ১২ টাকা ৪৫ পয়সার সমান। অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে যে জিনিস ১ টাকায় কেনা যেত, এখন সেটি কিনতে প্রায় ১২ গুণেরও বেশি টাকা খরচ করতে হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বার্ষিক গড়ে ৭.৩ শতাংশ হারে মূল্যস্ফীতি ঘটেছে।
সেই সময়ের ক্রয়ক্ষমতা নিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী রফিকুল ইসলাম জানান, ১৯৮৫ সালে ঢাকার সোবহানবাগ থেকে গুলিস্তানের বাসভাড়া ছিল মাত্র ৫০ পয়সা, আর ১ পয়সায় মিলত চকোলেট। পাঁচ পয়সায় কেনা যেত পাঁচটি হজমি বা একটি সাধারণ আইসক্রিম। এখন সেই একই জিনিসের দাম এক টাকারও বেশি।
তিনি আরও বলেন, ১৯৮৫ সালে গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায় যেতে বিলাসবহুল লঞ্চসিটসহ মোট খরচ হতো ১২ টাকা, আর এখন একই পথে যেতে লাগে প্রায় ১৭০ টাকা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শুধু টাকার মানই নয়, ছোট মুদ্রার অস্তিত্বও হারিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২ অনুযায়ী দুই টাকার কয়েন বা নোট পর্যন্ত সরকারি মুদ্রা। কিন্তু ১৯৭৪-৭৫ সালে বাজারে প্রচলিত মোট অর্থের মধ্যে সরকারি মুদ্রার অংশ ছিল ২.৬৯ শতাংশ, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ০.৮৩ শতাংশে।
এই পরিস্থিতিতে অর্থ বিভাগ পাঁচ টাকাকে সরকারি মুদ্রা হিসেবে ঘোষণা করার কথা বিবেচনা করছে। এটি বাস্তবায়িত হলে সরকারি মুদ্রার অংশীদারি ০.৮৩ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় দেড় শতাংশে পৌঁছাবে এবং ছোট মুদ্রার অস্তিত্ব কিছুটা হলেও টিকে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
কৃষি, অর্থ ও বাণিজ্য এর সর্বশেষ খবর