বেতন বৃদ্ধি ও পদোন্নতির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। রোববার সকাল থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে দেশের সাড়ে ৬৫ হাজারেরও বেশি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রায় এক কোটি শিশু শিক্ষার্থী।
শিক্ষকরা তিন দফা দাবি জানিয়েছেন— দশম গ্রেডে বেতন ও ভাতা প্রদান, পদোন্নতির কাঠামো পুনর্বিন্যাস, এবং শিক্ষক মর্যাদা সংক্রান্ত নীতিমালা সংস্কার।
শনিবার শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচির সময় পুলিশের লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও জলকামান নিক্ষেপে বহু শিক্ষক আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকরা পূর্বঘোষিত সময়ের আগেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা হয়েছে, অনেক শিক্ষক আহত হয়েছেন, কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। এ অবস্থায় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা পাঠদান বন্ধ রাখব।” তিনি আরও জানান, দাবি পূরণ না হলে প্রয়োজনে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।
পুলিশি হামলার ঘটনায় শিক্ষকরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলা ও আটক অভিযানের ঘটনায় তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছেন।
শিক্ষকরা পাঠদান বন্ধ রাখায় বিদ্যালয়ে গিয়ে ফিরে আসছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ডিসেম্বরের শুরুতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকায় অভিভাবকরা চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
রাজধানীর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক এমদাদ উল্লাহ বলেন, “আমার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে, এবার বৃত্তি পরীক্ষা দেবে। এখন ক্লাস বন্ধ থাকায় প্রস্তুতি ব্যাহত হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে ভালো ফল করা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।”
দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
সাজু/নিএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর